প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এ.কে.এম ইকবাল আজাদ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও উপজেলা ছাত্রলীগের (স্থগিত কমিটি) সহ- সভাপতি ছানাউল্লাহ গিয়াস উদ্দিন সেলু (৩০) নিখোঁজের ৫দিনের তার সন্ধান মেলেনি। গত ৮ জুন শনিবার দুপুরের পর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন। নিখোঁজ সেলু সদর ইউনিয়নের উচালিয়া পাড়া গ্রামের এলু মুন্সির ছেলে। বুধবার চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্র্যাইব্যুনালে সেলুর স্বাক্ষী দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। এদিকে ছাত্রলীগ নেতা ও হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী ছানাউল্লাহ গিয়াস উদ্দিন সেলুকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে বুধবার সকালে সরাইল উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। সমাবেশ থেকে সেলুকে জীবিত উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রতি আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বুধবার সকালে সদর ইউনিয়নের সেলুর নিজ গ্রাম উচালিয়া পাড়া গ্রামের কয়েকশ মানুষ সেলুকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষন করে হাসপাতাল মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন গ্রামের প্রবীন সর্দার হাফেজ আব্দুস সাত্তার, সাবেক মেম্বার সাঈদ মিয়া, মোঃ নজরুল মিয়া, লুতু মিয়া, তছলিম মিয়া, রুবেল ও হিমেল। সভায় বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা সেলু নিখোঁজের পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন এখানো তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমরা তাকে জীবিত উদ্ধার চাই। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে না পারলে কঠিন কর্মসূচী দেওয়া হবে। এদিকে সেলু নিখোঁজ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই ইশতিয়াক বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে হারুন মিয়া-(২০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে ৩দিনের রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতে প্রেরন করেছি। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যান করছি। এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। উল্লেখ্য ঃ দলীয় কোন্দলের জের ধরে গত বছরের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইকবাল আজাদ শারদীয় দূর্গাপূজা পরিদর্শনের জন্য গাড়ি নিয়ে সরাইল বাজারে প্রবেশকালে গাড়িটি টেম্পু স্ট্যান্ডের কাছে পৌছলে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে গাড়ি থেকে নামার সিগন্যাল দেয়। ইকবাল আজাদ গাড়ি থেকে নামা মাত্র প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা তাকে উপর্যপুরি কুপিয়ে ও বুকে বল্লম দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। ইকবাল আজাদকে রক্ষা করতে গিয়ে গাড়িতে থাকা তার ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি গিয়াসউদ্দিন সানাউল্লাহ সেলু সহ ৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের ছোট ভাই প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি (বিলুপ্ত কমিটি) আব্দুল হালিম সহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জন কে আসামী করে হত্যা সরাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দুই মাস তদন্তের পর পুলিশ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্র্যাইব্যুনালে মামলাটির শুনানি চলছে। |