সরাইলে সরকারি পুকুরে বর্জ্য, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কানিউচ্চ গ্রামে সরকারি খাস পুকুরে খামারের বর্জ্য ফেলার কারনে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। সাথে সাথে পুকুরপাড়ের ভূমিহীন বাসিন্দাদেরও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের চারপাশ নোংরা বর্জ্যে সয়লাব হয়ে গেছে। গরুর খামারের নোংরা বর্জ্য পাইপের সাহায্যে পুকুরে ছাড়া হচ্ছে। ওই পুকুরপাড়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন কয়েকশ লোক। হতদরিদ্র মানুষের প্রাত্যহিক দিনের প্রয়োজনীয় পানির যোগানের একমাত্র ব্যবস্থা এই পুকুর। বর্তমানে পুকুরপাড়ে বসবাস করাই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
কালিকচ্ছ এলাকার প্রত্যাশা মৎসজীবী সমবায় সমিতি। ওই সমিতি থেকে লিজ নেয় কানিউচ্ছ গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে ছিদ্দিক মিয়া। তিনি মাছ চাষের জন্য ইজারা নেয় বলে জানায় তারা। কিন্তু ছিদ্দিক মিয়া সেখানে মাছ চাষ না করে খামারের ময়লা আবর্জনা পাইপের সাহায্যে পুকুরে ফেলছে। আর এই দুর্গন্ধযুক্ত ময়লায় চার পাশের লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে।
কানিউচ্চ মৌজার বিএস দাগ নম্বর ১২৬-১২৮এর ২৫ শতাংশ খাস পুকুরটি প্রতি বছর ২৫০০ (দুই হাজার পাঁচশত) টাকা করে ২০২৬ বাংলার পহেলা বৈশাখ হতে ২০২৮ বাংলা ৩০শে চৈত্য পর্যন্ত মোট তিন বছরের জন্য ইজারা নেয়
এই বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এ এস এম মোসা এর বরাবর মো. উজ্জল মিয়া গত ১২ জুলাই এলাকাবাসীর পক্ষে ৩০জন স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ইউএনও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াঙ্কা কে দায়িত্ব দেয় বিষয়টি দেখার জন্য। কিন্তু ভুক্তভোগীরা এর কোন সুফল পায়নি।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী, সমুজ আলী, হেলাল মিয়া, জিলন মিয়া বলেন , ইজারাদার ছিদ্দিক মিয়া পুকুরটি ইজারা আনে মাছ চাষের জন্য, কিন্তু সে এখানে মাছ চাষ না করে তার খামারের ময়লা আবর্জনা পুকুরে ফেলে পানি নষ্ট করছে। তাকে অনেক বলার পরেও কোন লাভ হয় নাই। এই পুকুরটি দূষণের ফলে মানুষ আর ব্যবহার করতে পারছেনা। পুকুরে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করতে পারেনা। ঘরের জানালা খুললেই দূরগন্ধ আসে। আমরা এই পুকুরের দুর্গন্ধের কারণে ঘরের জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। তারা আরো বলেন ইজারাদার ছিদ্দিক মিয়াকে অনেকবার বলছি। সে বলে আমি ময়লা ফেলার জন্যই পুকুর ইজারা আনছি। এসব বিষয়ে আমরা ইউএনও অফিসে ইজারাদার ছিদ্দিক মিয়ার বিরোদ্ধে অভিযোগ দিলে সে তাদের আমাদেও নামে থানায় জিডি করেন। ও উপজেলার এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার ভয় দেখায়।
এই বিষয়ে ছিদ্দিক মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন আমি পুকুর দুষিত করছিনা, আমার খামারের মোটরের পানি পড়ে পুকুরে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সব মিথ্যা।
এব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি)ফারজানা প্রিয়াঙ্কার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কানিউচ্ছ খাস পুকুরে ময়লা আবর্জনা পেলার ব্যাপারে এলাকাবাসী যে অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগটি আমার হাতে এসেছে । সে বিষয়টি আমি তদন্তকরে আইনত ব্যবস্থা নেব।