Main Menu

সরাইলে জায়গা নিয়ে বিরোধের জের:: মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশীদের নামে মামলা। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নোয়াগাঁও(বাটেরা) গ্রামের রিক্সা চালক নারায়ণ দেবনাথ ও পরিমল দেবনাথ’র জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ।
শনিবার (১৮ জুন) সরেজমিনে গিয়ে যানা গেছে, নারায়ণ দেবনাথ পরিমলের বোন নাসির নগর উপজেলার ফান্দাউক এলাকার সুনু দেবনাথ’র কাছ থেকে খালি স্টাম্প এ সই করে ১ লক্ষ টাকা আনে। যার জন্য প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা লাভ গুনতে হয়েছে নারায়ণ কে। এইভাবে একবছর লাভ দিয়ে পরে নারায়ণ দেবনাথ পার্শ্ববর্তী বাড়ির আবু মিয়াকে সাথে নিয়ে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে আসে সুনুকে। তারা সে সময় টাকা দিয়ে স্টাম্প না নিয়ে চলে আসে।
এদিকে নারায়ণ দেবনাথ ও পরিমল দেবনাথ’র মধ্যে জায়গা নিয়ে বিরোধ চরমে। নারায়ণের ২৫ পয়েন্ট জায়গা দখল করে পাকা দালান গড়ে তোলে পরিমল। বুদ্ধি খাটিয়ে পরিমল দেবনাথ কৌশলে তার বোন সুনু দেবনাথ ‘এর কাছ থেকে স্টাম্প টা নিয়ে এসে এতে ৩ লক্ষ টাকা লিখে নারায়ণের নামে মামলা করে দেয়। এর জন্য নারায়ণ দেবনাথ কে বেশ কয়েকদিন হাজত খাটতে হয়।
সমপত্তির লোভে নারায়ণ কে থানায় মামলা দিয়ে অনেক হয়রানি করেন পরিমল। নারায়ণ দেবনাথ পেশায় একজন রিক্সা চালক। এই নিয়ে অনেক সালিশ বৈঠক হয়, কিন্তু পরিমল সালিশ কোনভাবেই মানে না। বাড়ির সীমানা সালিস কারকরা নির্ধারণ করে দিয়ে গেলেও পরিমল তা মানে না। গত ১০ জুন এলাকার কিছু যুবক তাদের নিজ উদ্যোগে বিষয়টি মিমাংসার জন্য এগিয়ে যায়। এসময় তারা উভয় পক্ষকেই ডাকে, কিন্তু পরিমল দেবনাথ তাদের ডাকে সারা দেয়নি। উল্টো এলাকার যুবকদের নামে মামলা করে দেয়।
ভুক্তভোগী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন পরিমল দেবনাথ ‘এর স্ত্রী রত্না দেবনাথ বাদি হয়ে ৬ জনকে আসামি করে জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে উল্লেখ করা হয় পরিমল দেবনাথ ‘এর ঘরের পূর্ব পাশে টিন দিয়ে তৈরী ধানের গোলা ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরিমল দেবনাথ কে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় আসামি গন।
আসামিরা হলেন, আবু মিয়া-র ছেলে রকিব মিয়া। আনছর মিয়ার ছেলে জাইদুল মিয়া, ছৈয়দ আনছরের ছেলে বাবুল মিয়া। হাতি রহমান’র ছেলে, লিটন মিয়া। ফজর আলী ‘র ছেলে, আশিক মিয়া। হামদু মিয়ার ছেলে হুমায়ুন মিয়া। ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জন। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এছাড়া স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করেও যানা যায় ওখানে আগুন লাগার মতো কোন ঘটনা ঘটে নি।
স্থানীয় হাবিবুর রহমান বলেন, এখানে আগুন লাগার কোন ঘটনা দেখে নাই। তিনি আরও বলেন জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় টা আমি এবং অনেকেই মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরিমল দেবনাথ মানে না।
স্থানীয় সোমো সরকার বলেন, বিচার শালিশ পরিমল মানে না। আব্দুল বারি নামে এক জন বলেন, পরিমলকে এলাকার কিছু সালিশ কারক ইন্দন যোগাইতাছে। তাদের ইন্দনে সে এইসব করতাছে।
সুধীর সরকার নামে এক জন বলেন, এখানে আগুন লাগার মতো কোন ঘটনা ঘটে নাই। পরিমল চাইতাছে নারায়ণের জায়গা জোর করে নিয়া যাইতো। সে নারায়ণ কে দুইডা বছর ধইরা জালাইয়া ফালাইতাছে। পরিমল দেবনাথ এর বাড়িতে গিয়ে তার মা মায়া রানী ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায় নি।
মায়া রানী’র কাছে আগুন লাগার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন না কেউ আগুন লাগাইছে না। তারা আমারার বাড়িতে আগুন লাগাইয়া দিবো কইছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে, পরিমল দেবনাথ মুঠোফোনে বলেন, আমার কাছে নারায়ণ ৬০ হাজার টাকা করে তিন শতাংশ জায়গা বিক্রি করে। কিন্তু আমাকে দলিল করে দেয় না। দলিল না করে দিয়ে আরও পার্শ্ববর্তী মুসলমানদের নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। আমি বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করছি। ইউপি সদস্য মারাজ মিয়া বিষয়টি নিষপত্তি করার জন্য আগামীকাল চেয়ারম্যান অফিসে বসার কথা।
সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে কাগজটি পেয়েছি। আমি ঘটনা স্থলে যাইনি। বিষয় টা সঠিক তদন্ত করে দেখা হবে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।