‘সারাদেশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বানাবেন না।’-আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী
ডেস্ক ২৪::‘সরকারের ভেতরেই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকচক্রের বড় বড় রাঘববোয়াল ঘাপটি মেরে আছে’ বলে অভিযোগ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী। তিনি বলেন, ‘ধর্মপ্রাণ জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে সব রাজনৈতিক দলকেই ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।’
একই সঙ্গে তিনি ইসলাম ও আলেম-ওলামাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপকারী শয়তানদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ইসলামী মহাসম্মেলনের শেষ দিন শুক্রবার রাতে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
হেফাজতের আমির আহমদ শফী আরও বলেন, ‘প্রিয় নবীর আদর্শে আমরা নিজেদের জীবনকে সুন্দর ও আলোকিত করতে পারলে আল্লাহ আমাদের ফরিয়াদ শুনবেন, আমাদের দোয়া কবুল করবেন। কাজেই আল্লাহর কাছে আমাদের প্রত্যেকের তওবা করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের যারা কর্ণধার, রাজনীতিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের দায়দায়িত্ব অনেক বড়। আল্লাহর কাছে প্রতিটি বিষয়ে তাদের জবাব দিতে হবে। জনগণের অধিকার, তাদের শান্তি-সমৃদ্ধি ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য খুবই জরুরি। পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ, প্রতিপক্ষকে নির্মূল ও ধ্বংস করার চিন্তা থেকে বেরিয়ে না এলে জাতি হিসেবে আমরা একসময় বিলীন হয়ে যাব। তাই সময় থাকতে সবাইকে সংশোধন হতে হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদরাসা জামিয়া ইউনুছিয়ায় পুলিশি হামলা ও গুলি করে মাদ্রাসাছাত্র হত্যা প্রসঙ্গে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছি। আমাদের ধৈর্য ও শৃঙ্খলাবোধকে দুর্বলতা ভেবে ইসলামবিদ্বেষী কোনো মহল বার বার উস্কানি দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে।’
তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্র বা আলেম-ওলামাদের মামলায় জড়ানো কিংবা হয়রানি বরদাশত করা হবে না। সারাদেশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বানাবেন না।’
হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিল ও জুমার খুৎবা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে সরকারকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন, সরকারের মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এখন স্বীকার করছেন, কওমী মাদ্রাসার আলেম-ওলামারা কোনো ধরনের সন্ত্রাসী-জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত নয়। আমি বলব, দেরিতে হলেও তাদের বোধোদয় হয়েছে।’ ইসলামী সম্মেলন, ওয়াজ-মাহফিল ও খুতবা নিয়ন্ত্রণের ফন্দি-ফিকির করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিংবা প্রশাসনের অন্য কাউকে দিয়ে জুমার খুৎবা, ইসলামি সম্মেলন আর ওয়াজ-মাহফিলে খবরদারির চেষ্টা তাওহিদী জনতা শক্তহাতে রুখে দেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সম্মেলন শেষে দেশ-জাতির সমৃদ্ধি, মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।