শিশুর লাশ আটকে টাকা দাবি : বক্তব্য বদলাতে চাপ’, ভুক্তভোগীর বাড়িতে সেই পুলিশ কর্মকর্তা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে শিশুর লাশ আটকে পুলিশের টাকা দাবির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াটোয়েন্টিফোরডটকমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে ভুক্তভোগীর বাড়িতে অবস্থান করছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালীরা। নানাভাবে ভুক্তভোগীর বক্তব্য বদলাতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনার তদন্ত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিসুর রহমানের শনিবার দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়িতে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। কিন্তু এর আগেই সকালে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য, ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রুবেল মিয়া ও স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারদলীয় নেতাকর্মী ভুক্তভোগীর বাড়িতে অবস্থান নেন।
ভুক্তভোগী বোরহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘দাড়গা, চেয়ারম্যানসহ প্রায় পাঁচশ লোক আমার বাড়িতে আইছে। আমারে ধমকাইতাছে মিথ্যা কথা কইবার জন্য। চেয়ারম্যান, মেম্বার কইছে আমরার কাম লাগত না? তর কি হইব পরে বুঝুম। তর অহন মিথ্যা কথা কইতে হইব। তুই সত্য কথা কইতা পারতে না। পরে পুলিশের দারোগা কাঞ্চন ও রহিম আমার হাতে ধরে অনুরোধ করে মিথ্যা বক্তব্য দিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান বারবার আমাকে বলতাছে, তুমি সাংবাদিকদের কাছে যে বক্তব্য দিছ তা বদলাতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পুলিশের বড় স্যার আসতাছে তাদের কাছে নতুন করে বক্তব্য দিবা। আমরা যা বলে দিব তাই তুমাকে বলতে হবে। আর না বললে বাড়ি ছেড়ে তুমাকে চলে যেতে হবে।’
এ বিষয়ে ভলাকুট ইউপি চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসবে ঘটনার তদন্ত করতে তাই আমি ও কার্তিক চন্দ্র (ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি) সকাল থেকে অবস্থান করছি। তবে আমি কাউকে হুমকি দেইনি। বরং কেউ যাতে তাদের হুমকি দিতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সরাইল সার্কেল মো. আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলব।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভলাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের রবিউল্লার মেয়ে আরিফা আক্তার নামে ১৫ মাস বয়সী এক শিশু বাড়ির পাশে ডোবায় পড়ে মারা যায়। শিশু মারা যাওয়ার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকলেও চাতলপাড় পুলিশ ফাঁড়ির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার সিংহ দাফনের আগমুহূর্তে বাড়িতে পৌঁছে টাকা দাবি করে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। পরে পুলিশের দাবিকৃত টাকা দেওয়ার পর লাশ দাফনের অনুমতি দেন।