ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল :: না এসেই অর্ধলক্ষাধিক টাকার বেতন নিচ্ছেন দুই চিকিৎসক
একজন মো. জহিরুল হক। আরেকজন এসএম নূরুল আবছার। দু’জনেই ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। প্রায় এক বছর আগে নাক-কান-গলার সিনিয়র কনসালটেন্ট জহিরুল আর সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) আবছার বদলি হয়ে আসেন এই হাসপাতালে। যোগদান পর্যন্তই দায়িত্ব মিটিয়েছেন তারা। এরপর আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেননি। একদিনও চিকিৎসা সেবা দেননি। কিন্তু বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন ঠিকঠাক মতোই। মাসে মাসে বেতন-ভাতা পেয়েছেন বাড়িতে বসেই। একজন বেতন নিচ্ছেন ৮৪ হাজার টাকার ওপরে, আরেকজন ৬৮ হাজার টাকারও বেশি। সম্প্রতি জেলা সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বিনা কর্মে এ দু-ডাক্তারের আর্থিক সুবিধে ভোগের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই কমিটির সভাপতি সদর সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ কমিটির সদস্যরা। এমন খবর জানিয়েছে মানবজমিন।
হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়- ১৯শে মার্চের ওই সভার পরই এই দুই চিকিৎসককে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে তাদের অনুপস্থিত থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছে। ওই চিঠিতে বলা হয়-‘ আপনি অত্র স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় ও তারিখে কর্মস্থলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কর্তব্য কাজে অনুপস্থিত আছেন। আপনি দীর্ঘ সময় অর্জিত ছুটি ভোগ করে যোগদানের পর নিয়মিতভাবে কর্মস্থলে আগমন করছেন না। আপনি মাঝে মধ্যে কর্মস্থলে আগমন করলেও যথাযথভাবে আপনার ওপর অর্পিত চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পালন করছেন না’। চিঠিতে ৫ দিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না এর ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হয়। হাসপাতালের ওই সূত্র জানায়-এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ৩ দফা তাদের কর্মস্থলে না আসার কারণে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু এসব চিঠি তারা পাত্তা দেননি। জেলা সদর হাসপাতালে নাক-কান-গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই ৩ বছর ধরে। ২ বছর পদটি শূন্য থাকার পর একবছর আগে জহিরুল হককে পোস্টিং দেয়া হয়। জহিরুল হকও অনুপস্থিত একবছর ধরে। এই চিকিৎসক কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া(বি-পাড়া) উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত মো. মোকসুদ আলীর ছেলে। আর এসএম নূরুল আবছার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সালীয়া গ্রামের এসএম নূরুল হুদার ছেলে।
জেলা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন বলেন- অনুপস্থিত থাকার কারণে তাদের দফায় দফায় চিঠি দেয়া হয়েছে। বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।