ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী তোফাজ্জল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের আলাকপুর গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে। সোমবার রাতে স্বামী তোফাজ্জল হক নিজ বাড়িতে আসলে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে।
নিহতের পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বাজাখা গ্রামের ইব্রাহীম মিয়া মেয়ে নাছরিন আক্তারের সাথে একই ইউনিয়নের পাশ্বের গ্রাম আলাকপুর গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে সৌদী প্রবাসী তোফাজ্জল হকের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বামীকে স্বর্ণ, ফার্নিচারসহ যৌতুকবাবদ প্রায় ৪লক্ষ প্রাদন করে গৃহবধুর পরিবার। বিয়ের পর স্ত্রীকে রেখে প্রবাসে চলে যায় তোফাজ্জল হক। দুই বছর পরপর ৪বার আসে দেশে। বিয়ে পর এ দম্পত্তির একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে ছেলেটির বয়স ৫বছর। চলতি বছরে আগষ্টে দেশে চলে আসে সে। দেশে চলে আসার পর স্থায়ী ভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন এবং দেশে ব্যবসা করবে স্থির করেন। এরপর থেকেই বাবার বাড়ি থেকে স্ত্রী নাছরিন আক্তারকে ব্যবসার জন্য ৫লক্ষ টাকা আনতে চাপ দিতে থাকে। ১২ নভেম্বর স্ত্রীকে টাকার জন্য মারধর করতে থাকে স্বামী। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে নাছরিন আক্তার বাবা ইব্রাহীমকে রাতে ফোন দেয়। ফোন পেয়ে রাতেই মেয়ের বাড়িতে যান বাবা। পরে বাবার সামনেই মেয়েকে নির্যাতন করতে থাকে স্বামী। বাবা বাধা দিলে তা না শুনে মেয়ের উপর অত্যাচর চালায়। একপর্যায়ে নির্যাতনে স্ত্রী গুরুত্বর আহত হলে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় বাবা চিকিৎসার জন্য আশুগঞ্জ নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। সকালে ছেলের পরিবারের লোকজন বিষয়টি আপোস মিমাংসার কথা বলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গৃহবধুকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যান। এবং লাশ দ্রুত দাফন করে ফেলেন। পরে নিহত গৃহবধু নাছরিনের পিতা ইব্রাহীম বাদী হয়ে আদালতে গৃহবধুর স্বামী তোফাজ্জল হককে প্রধান আসামী ও স্বামীর বাবা, মা, বোন ও বোনের স্মামীকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর সোমবার রাতে স্বামী তোফাজ্জাল হককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পর থেকে বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে।
নিহতের পিতা ইব্রাহীম মিয়া জানান, আমার মেয়েকে যৌতুকে জন্য নির্যাতন করে হত্যা করেছে স্বামীও তার পরিবারের লোকজন। তারা জোর পূর্বক লাশ নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করে ফেলে। আমি হত্যাকারীদের ফাসিঁ দাবি জানাই এবং আমার মেয়ের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের দাবি জানাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রার্প্ত কর্মকর্তা নবীর হোসেন জানান, নাছরিন আক্তারকে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী তোফাজ্জল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করার জন্য পক্রিয়া চলছে।