ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
প্রতিবেদক :: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নিন্মমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে মসজিদের প্রকল্প বরাদ্দ পাশ করে দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কসবা উপজেলার একটি মসজিদ কমিটি গত ২৮ জানুয়ারি জেলা পরিষদের প্রশাসকের কাছে এ মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে কোনো ছুটি না নিয়েই গত ৬ ডিসেম্বর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানান জেলা পরিষদ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা উপজেলার পাঁচ নম্বর বিনাউটি ইউনিয়নের মনিচং গ্রামের মনিচং চান্দাইসার জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদ থেকে একটি প্রকল্প বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গত বছর নভেম্বর মাসে মসজিদ কমিটির কাছ পঞ্চাশ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। মসজিদ কমিটি ওই বরাদ্দে পাওয়ার জন্য নি¤œমান সহকারী ওমর ফারুককে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেন। টাকা নিলেও মসজিদ কমিটি এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ পায়নি। এদিকে টাকা নেওয়ার পর থেকে ওমর ফারুক মসজিদ কমিটির সদস্যের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। মসজিদ কমিটির সদস্যরা তাঁকে ফোন দিলেও সে ফোন ধরেন না।
মনিচং চান্দাইসার জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুল হক বলেন, গত বছর নভেম্বর মাসে মসজিদের উন্নয়ন কাজ করতে একটি বরাদ্দের জন্য জেলা পরিষদে যোগাযোগ করি। সেময় ওমর ফারুক একটি প্রকল্পের প্রায় দুই লাখ টাকার একটি বরাদ্দ পাইয়ে দিবে বলে একটি আবেদন করতে বলে। তখন আবেদন লিখে তাঁর কাছে জমা দেয়। সেসময় ওমর ফারুক পঞ্চাশ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। নভেম্বর মাসের শেষে দিকে তাকে ত্রিশ হাজার টাকা এবং ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে বাকি ২০ হাজার টাকা দেয়। এরপর থেকে অনেক চেষ্টা করলেও সে কোনো ফোন ধরেনি। তাই প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছি। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করব বলে তিনি জানান।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছ, কসবা উপজেলার মনিচং চান্দাইসার জামে মসসিদ থেকে প্রকল্প বরাদ্দের জন্য কোনো আবেদন এখন পর্যন্ত জেলা পরিষদে দেওয়া হয়নি। গত বছর ৬ ডিসেম্বর থেকে ওমর ফারুক কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত রয়েছে। একই তারিখে সে চারদিনের একটি ছুটির আবেদন করলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে সে একাধিকবার ছুটির আবেদন করলেও সেগুলোও মঞ্জুর করা হয়নি। এদিকে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর জন্য গত ২৭ জানুয়ারি জেলা পরিষদ থেকে ওমর ফারুককের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্রশাসনি কর্মকর্তা রতিশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ওমর ফারুক বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার ছুটির আবেদন করলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি। অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর জন্য তাঁর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। আরেকটি চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটার ওমর ফারুকের সঙ্গে কথা বলতে জেলা পরিষদ গেলেও সেখানে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার তিনটি মুঠোফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক সৈয়দ এ কে এম এমদাদুল বারী বলেন, ‘কেন সে অফিসে আসছে না এবং বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।