বিবাদ সৌদি আরবে, কলেজপাড়ায় মহসীনের নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ
অর্থ নিয়ে বিবাদ হয়েছে সৌদি আরবে, সেই বিবাদকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়ায় প্রবাসীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক মেম্বার ও যুবলীগ নেতা মহসিন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ মুজাহিদুল ইসলাম রনি নামের ওই প্রবাসীর পরিবারের। হামলার সময় প্রবাসী পরিবারের শোরগোল শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে মহসিন ও তার সহযোগিরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের ব্যবহৃত ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের কলেজপাড়ার সাজুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রনির পিতা মাছিহাতা ইউনিয়নের আটলা্ গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম রঙ্গু জানান, রনি ৬ বছর যাবত সৌদি আরবের জেদ্দাতে চাকুরী করছেন। তিনি নিজেও ৩২ বছর সেখানে ছিলেন। ২ বছর আগে তারা কলেজপাড়ায় বাড়ি করেছেন। তাদের দূর সম্পর্কের আত্বীয় হন যুবলীগ নেতা মহসিনের ভাতিজা টুটুল । রনি তাকে নিজের মালিকের অধীনে কাজের ব্যবস্থা করে দেন। সাথে অপর আত্বীয় সুলতানপুর গ্রামের টিটুকেও রনি কাজে নেন। মদিনা থেকে সিগারেটসহ, এ জাতীয় মালামাল জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ার দ্বায়িত্ব টিটু ও টুটুলের। সম্প্রতি ১ লক্ষ ৬২ হাজার রিয়ালের (সৌদি মুদ্রা) মালামাল আনতে যাওয়ার পথে পুরো অর্থই ছিনতাই হয়ে যায় বলে দাবি করে টিটু ও টুটুল। এ ঘটনার পর সৌদি মালিক তাদের মোবাইল ও পাসপোর্ট জব্দ করে। এর জের ধরেই মহসিন তার লোকজন নিয়ে রনির বাসায় গিয়ে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ রফিকুল ইসলামের। এসময় আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে স্বর্ণালংকার ও সৌদি রিয়াল লুট করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রনির স্ত্রী সোনিয়া খানম জানান, সন্ধ্যার দিকে মহসিন ৫-৬টি মোটর সাইকেলে করে লোকজন নিয়ে তাদের বাসায় আসে। এসে নানা হুমকি দিতে থাকে। এর প্রতিবাদ করা তার শ্বশুরকে (রঙ্গু ) মরাধর ও ঘরের আসবাব পত্র ভাঙ্গচুর করে। এ সময় তার গলায় থাকা স্বর্ণের হার ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে আগ্নেয়াস্ত্র ও হামলার কথা অস্বীকার করেছেন যুবলীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সদর উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন খন্দকার। তিনি জানান, তার ভাতিজা টুটুলের কাছে আপন ভাগনিকে বিয়ে দিয়েছেন তারা। টুটুলকে বিদেশ নিয়েছে রনি। সেখানে তাকে দেড় মাস জেলে রাখা হয়েছে। টাকা হেরফেরের ঘটনায় মোবাইল ও পার্সপোর্ট নিয়ে তাকে মারধর করা হচ্ছে। বর্তমানে সে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তার খোঁজ নিতেই সেখানে গিয়েছিলেন। এসময় রনির স্ত্রী সোনিয়া খানম তাদের সাথে খারাপ আচরন ও গালমন্দ করেন। প্রতিবাদ করলে ঘরের ভেতর দিয়ে তালা দিয়ে ডাকাতি হচ্ছে বলে শোরগোল শুরু করে। পরে প্রশাসন এসে তাদের উদ্ধার করে। তিনি দাবি করেন, সে সময় তার সাথে থাকা শহর ছাত্রলীগ সভাপতি মিকাইল হোসেন হিমেল ও যুবলীগের ৮নং ওয়ার্ডের সভাপতি জীবন খন্দকারের মোটরসাইকেল কুপিয়েছে এলাকাবাসী।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক মোতালেব হোসেন বলেন, হামলার খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। টাকা-পয়সার প্রবাসের বিরোধ নিয়ে এখানে ঝামেলা হয়েছে। আমরা যাবার আগেই তারা পালিয়ে গেছে। আমরা অভিযোগ দিতে বলেছি।