পিপলস স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের কোচিংয়ে না যাওয়ায় ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর শহরের পিপলস স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের কোচিং ক্লাশে উপস্থিত না হওয়ায় বিদ্যালয়ের হোস্টেল সুপার ও এক সহকারী শিক্ষক নাজমুল হক নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত ওই ছাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এঘটনা ঘটে।
এঘটনায় আহত ছাত্র নাজমুল হকের মামা মো. জায়েদুল কবীর বাদী হয়ে বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ রওশনআরা বেগম, হোস্টেল সুপার মো. মাহফুজ ও সহকারী শিক্ষক নুরুল হকের বিরুদ্ধে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুবোধ চন্দ্র চৌধুরী ও উপাধ্যক্ষ মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আহত ছাত্র নাজমুল হক সদর উপজেলার পুতাই গ্রামের সহিদুল হকের ছেলে। সে পিপলস স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের দশম শ্রেণীর আবাসিক ছাত্র।
বিদ্যালয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দিনগত রাতে সেহরি খেয়ে পিপলস স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের আবাসিক হলে ঘুমিয়ে পড়ে নাজমুল। মঙ্গলবার সকাল আটটায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব তত্ত্ববধানে পরিচালিত কোচিংয়ে তার ক্লাশ ছিল। কিন্তু ঘুম থেকে উঠতে না পারায় নাজমুল কোচিং ক্লাশে যেতে পারেনি। কোচিং ক্লাশে অনুপস্থিত পেয়ে উপাধ্যক্ষের রওশনআরা বেগমের নির্দেশে হোস্টেল সুপার মো. মাহফুজ ও সহকারী শিক্ষক নুরুল হক নাজমুলের ডাকতে যান। দরজা খোলামাত্রই মাহফুজ ও নুরুল হক হাতে থাকা কাঠের রুল ও বেত দিয়ে নাজমুলকে বেধড়ক পিটাতে শুরু করেন। এসময় তার চিৎসকারে হোস্টেলের অন্যান্য ছাত্র ও কর্মচারীরা এগিয়ে আসলেও মাহফুজ ও নুরুল হক তাদের দমক দিয়ে সরিয়ে দিয়ে পুনরায় নাজমুলকে পেটানো শুরু করেন। এর এক পর্যায়ে নাজমুল সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে।
পরে খবর পেয়ে তার মামা মো. জায়েদুল কবীর ও মা মমতাজ বেগমসহ অন্যান্য স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌছে নাজমুলকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিকেলে নাজমুলের মামা বিষয়টি লিখিত আকারে সদর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগে বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ রওশনআরা বেগম, হোস্টেল সুপার মো. মাহফুজ ও সহকারী শিক্ষক নুরুল হকের নাম উল্লেখ করেন।
বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ রওশনআরা বেগম বলেন, হোস্টেল বাসার মতো। এখানে একটু শাসন তো করাই যেতে পারে। বেত্রাঘাত করলেও বেশি মারধর করেনি বলে জানান তিনি। আপনার নির্দেশে ওই ছাত্রকে মারধর করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুবোধ চন্দ্র বলেন, ঘটনাটি হোস্টেলে ঘটেছে, বিদ্যালয়ে নয়। মারধরের বিষয়টি শুনেছি। পরিচালনা কমিটির সদস্যদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আহত ছাত্রের স্বজনদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে।