অবশেষে জামিন পেলেন নাসিরনগরের ঘটনায় কারান্তরীণ সন্দেহভাজন ‘মূল হোতা’ চেয়ারম্যান আঁখি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু পল্লীতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কারান্তরীণ সন্দেহভাজন ‘মূল হোতা’ বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ৪ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। জামিনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান আঁখি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ইনস্পেক্টর) মাহবুবুর রহমান জানান, গত ১৩ মার্চ বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির জামিন আবেদন করলে ২২ মার্চ ৪ সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। তবে আঁখির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার নম্বর ও ধারা বিভ্রাটের কারণে তিনি বিলম্বে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এর আগে নাসিরনগর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ‘মূল হোতা’ হিসেবে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির নাম বেরিয়ে আসলে তিনি গা ঢাকা দেন। এরপর গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার ভাটারা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এছাড়া ১৫ জানুয়ারি আঁখিকে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মামলায় গ্রেফতার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ (৩০) দাসের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে নাসিরনগর উপজেলা।
পরদিন (৩০ অক্টোবর) মাইকিং করে সমাবেশ ডাকে দুটি ইসলামী সংগঠন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই দুষ্কৃতকারীরা নাসিরনগর উপজেলা সদরে হামলা চালিয়ে অন্তত ১০টি মন্দির ও শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে দুষ্কৃতকারীরা আবারও উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৬টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাসহ ১২২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।