‘বিতর্কিত ডাক্তার’ ইমরান কর্তৃক প্রেসক্লাব সভাপতি লাঞ্চিত।। অপসারণে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের সেই ‘উন্মাদ চিকিৎসক’ ইমরান খান এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজাকে লাঞ্ছিত করেছেন।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের নিচতলার ১১২ নম্বর কক্ষে তার সঙ্গে দুর্র্ব্যবহার করেন এই চিকিৎসক। এ ঘটনায় জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রতিবাদ সভা করে অভিযুক্ত চিকিৎসক ইমরান খান ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আকবর হোসেন চৌধুরীর অপসারণ দাবি করে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দেন। সাতদিনের মধ্যে তাদের অপসারণ না করা হলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি দেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সহসভাপতি সৈয়দ মো. আকরামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন জামির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. আরজু, প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক সমতট বার্তার সম্পাদক মনজুরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম কাউসার এমরান, এটিএন নিউজের পূর্বাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান পীযূষ কান্তি আচার্য, মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার জাবেদ রহিম বিজন, আমাদের সময়ের স্টাফ রিপোর্টার দীপক চৌধুরী বাপ্পী, যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি মনির হোসেন।
প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইনকিলাবের জেলা প্রতিনিধি খ আ ম রশিদুল ইসলাম, স্থানীয় দৈনিক কুরুলিয়ার সম্পাদক ইব্রাহিম সাদত, নয়া দিগন্তের জেলা প্রতিনিধি আল আমিন শাহীন, বৈশাখী টিভির জেলা প্রতিনিধি মফিজুর রহমান লিমন, সময় টিভির ব্যুরো প্রধান উজ্জল চক্রবর্তী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বেলাল, একাত্তর টিভির জেলা প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন রুমি, এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার শিহাব উদ্দিন বিপু, মোহনা টিভির জেলা প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম শাহজাদা, যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহাদৎ হোসেন, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি মাসুক হৃদয়, চ্যানেল নাইনের জেলা প্রতিনিধি আল মামুন, দৈনিক করতোয়ার জেলা প্রতিনিধি শাহজাহান সাজু, সবুজ দেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মজিবুর রহমান খান, দৈনিক সরোদের স্টাফ রিপোর্টার খন্দকার শফিকুল আলম স্বপন, জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি আজিজুল আলম সঞ্চয় ও আলোর বার্তা’র জেলা প্রতিনিধি আকলিমা আক্তার শিউলী।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালনে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গেলে প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহাদৎ হোসেন ও চ্যানেল নাইনের জেলা প্রতিনিধি আল মামুনকে পেটাতে তাদের দিকে তেড়ে আসেন চিকিৎসক ইমরান খান। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে এই নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া তার অপচিকিৎসার শিকার হয়ে গত ২ জুন সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের সেন্দ গ্রামের চৈতেন সরকারের মেয়ে ও কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর এলাকার দেবেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাসের স্ত্রী বীনা সরকার (২৭) মারা যায়।
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, নাকের পলিপাস (নাকের মাংস বৃদ্ধি) জনিত সমস্যা নিয়ে ইমরান খানের কাছে আসেন বীনা। পরে বীনার নাকের অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে পরিবারকে জানায় ইমরান। পরে অস্ত্রোপচার করাতে সদর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় বীনাকে। অস্ত্রোপচারের আধ ঘন্টা পর প্রায় বীনা মারা যায়।
নিহতের স্বামী দেবেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও ভাই পলাশ সরকার অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসক ইমরান খান তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তারা আরও বলেন, ডা. ইমরানের অবহেলার কারনেই বীনা মারা গেছে। মৃত্যুর পর তাদেরকে মৃত্যুর ছাড়পত্র ছাড়াই হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।