Main Menu

পলাতক যুদ্ধাপরাধী হাসান আলীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ

+100%-

ডেস্ক ২৪::গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের ‘রাজাকার কমান্ডার’ সৈয়দ মো. হাসান আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। পলাতক থাকায় আসামীর অনুপস্থিতিতেই মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক হাসান আলীকে খুঁজে বের করে রায় কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্রসচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগে হাসান আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। দ্বিতীয়, পঞ্চম ও ষষ্ঠ অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। প্রথম অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়।

আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনে মৃত্যুদণ্ড কীভাবে কার্যকর করা হবে, সেই বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে ফৌজদারি কার্যবিধিতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বলা আছে। এ ছাড়া ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বলা আছে। সরকার চাইলে এই দুটোর যেকোনো একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে ট্রাইব্যুনালে রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রায় পড়া শেষ হয়। ১২৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি সংক্ষিপ্ত আকারে পড়া হয়।

৬৮ বছর বয়সী এই যুদ্ধাপরাধী এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে আদালতকে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ বা প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত আসা ১৯টি রায়ের মধ্যে চারটি মামলায় মোট পাঁচজন পলাতক আসামির সাজার আদেশ হলো। এদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আজাদ, একাত্তরের দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন, ফরিদপুরের রাজাকার কমান্ডার জাহিদ হোসেন খোকনের মৃত্যুদণ্ড এবং জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জব্বারের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় আসে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ নভেম্বর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগে হাসান আলীর বিচার শুরু হয়। ৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে ২৬ জন সাক্ষ্য দেন। গত বছরের ৩ এপ্রিল তাকে গ্রেফতারের জন্য ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারি করেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে গ্রেফতার করতে না পারায় পলাতক ঘোষণা করে হাসান আলীর বিচার করেন ট্রাইব্যুনাল।


ছয় অভিযোগ: হাসান আলীর বির“দ্ধে প্রথম অভিযোগ, একাত্তরের ২৭ এপ্রিল তাড়াইলের সাচাইল পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আহমদ ওরফে হাচু ব্যাপারীর সাতটি ঘর লুট করে আগুনে পুড়িয়ে দেন হাসান আলী, সহযোগী রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা। হাচু ব্যাপারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় অভিযোগ, ২৩ আগস্ট হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা কোনাভাওয়াল গ্রামের তফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়াকে হত্যা করে দুটি ঘর লুট ও দুজনকে অপহরণ করেন। তৃতীয় অভিযোগ, ৯ সেপ্টেম্বর হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা শিমুলহাটি গ্রামের পালপাড়ার অক্রুর পালসহ ১০ জনকে হত্যা করে ঘরবাড়িতে আগুন দেন। চতুর্থ অভিযোগ, ২৭ সেপ্টেম্বর বড়গাঁও গ্রামের মরকান বিলে বেলংকা রোডে সতীশ ঘোষসহ আটজনকে হত্যা করেন হাসান আলী ও সহযোগী রাজাকাররা। পঞ্চম অভিযোগ, ৮ অক্টোবর হাসান আলী, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা আড়াইউড়া গ্রামের কামিনী কুমার ঘোষ ও জীবন ঠাকুরকে হত্যা করে ঘরবাড়ি লুট করেন। ষষ্ঠ অভিযোগ, ১১ ডিসেম্বর হাসান আলী ৩০-৪০ জন রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে নিয়ে সাচাইল গ্রামের শতাধিক ঘরে অগ্নিসংযোগ করেন এবং আবদুর রশিদকে হত্যা করেন। – See more at: http://www.sheershanewsbd.com/2015/06/09/83816#sthash.Jg4fzKGZ.dpuf






Shares