খালেদার জিয়াকে সার্কিট হাউস ব্যবহারের অনুমতি দিতে চাননি জেলা প্রশাসন



বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়ার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফরকালে জেলা প্রশাসনের অসহযোগিতা ছিল। এই অভিযোগ মিলেছে জেলা বিএনপির নেতাদের কাছ থেকে। তারা বলেন, নেত্রী আসার আগে এ নিয়ে তারা মুখ খুলতে চাননি। নীরবে সহ্য করেছেন। জেলা বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সার্কিট হাউজ ব্যবহারের অনুমতি পেতে তাদের বেগ পেতে হয়েছে। ২-৩ দিন চেষ্টার পর সার্কিট হাউজ ব্যবহারের অনুমতি মিললেও চাহিদা মতো কক্ষ দেয়া হয়নি। তবে অতিথি আপ্যায়নে সার্কিট হাউজে রান্না-বান্নায় ছিল নিষেধাজ্ঞা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফরকালে কিছু সময়ের জন্য খালেদা জিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউজে ওঠেন। তিনি এখানে মধ্যাহ্নভোজ সারেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা তার সফরসঙ্গী ছিলেন। পর্যাপ্ত কক্ষ না পাওয়ায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জেলা বিএনপি নেতারা এই অভিযোগ করে জানান, প্রথমে জেলা প্রশাসন সার্কিট হাউজ ব্যবহার করতে দেবে না বলে দৃঢ় অবস্থানে ছিল। পরে শুধু খালেদা জিয়ার জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ দিতে সম্মত হয়। তার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য কোন কক্ষ বরাদ্দ দিতে চাইছিলেন না তারা। জেলা বিএনপি নেতারা এ নিয়ে চাপ সৃষ্টি করলে কয়েকটি কক্ষ বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট শফিকুল ইসলাম জানান, দলের চেয়ারপারসন আসবেন বলে তারা সার্কিট হাউজ বরাদ্দ পেতে ১৮ই সেপ্টেম্বর প্রথম জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সার্কিট হাউজ ব্যবহারের অনুমতি পান তারা ২১শে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়। ১৮ই সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রতিদিন জেলা বিএনপির ১০-১২ জন করে নেতা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন তাদেরকে বলা হয় বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেখান থেকে উত্তর না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। পরে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের চাহিদামতো কক্ষ পাইনি। তবে নেত্রীর ব্যবহারের জন্য ডাইনিং স্পেসসহ যে কক্ষটি চেয়েছিলাম সেটি আমাদেরকে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হলেও সার্কিট হাউজে খাবার রান্না-বান্না না করার জন্য নিষেধ করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনসসহ আরও কয়েকজনের খাবার রান্না করে আনা হয় জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের বাসা থেকে। বাকি আরও প্রায় ১০০ অতিথির খাবার রান্না করা হয় অন্যত্র। শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা চেয়েছিলাম সার্কিট হাউজের বাবুর্চি দিয়ে রান্না-বান্না করাতে। কিন্তু অনুমতি না থাকায় সম্ভব হয়নি। তবে বাইরে থেকে রান্না-বান্না করে আনা খাবার পরিবেশনে তাদের আপত্তি নেই বলে আমাদেরকে জানানো হয়। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেকটর (এনডিসি) সাব্বির আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সার্কিট হাউজ ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হচ্ছিল না এরকম কথা আমি শুনিনি। আর খাবার-দাবারের ব্যবস্থা উনারা চাননি। নিজেরা রান্না-বান্না করে নিয়ে এসেছেন। তিনি দু’টি রুম বরাদ্দ দেয়ার কথা জানান। বলেন, সার্কিট হাউজে তারা স্বল্প সময়ের জন্য ছিলেন। ওই সময় ফ্রেশ হয়েছেন শুধু।
সূত্র ঃ মানবজমিন।