প্রতিবেদক : টানা চারদিনের হরতালের প্রথম দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হরতালকারীদের সাথে পুলিশ ও র্যাবের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। জেলা শহরের অন্তত সাতটি স্থানে সংঘর্ষের সময় কমপক্ষে ১০জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত আহত হয়েছে। অসংখ্য ককটেল বিস্ফোরণে গোটা শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট-টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার হয়েছে অন্তত ছয়জন। ![br hr 10-11-13 3](https://i0.wp.com/brahmanbaria24.com/wpa/wp-content/uploads/2013/11/bbaria24.com_wp-content_uploads_2013_09_br-hr-10-11-13-3.jpg?resize=101%2C67)
![br hr 10-11-13 2](https://i0.wp.com/brahmanbaria24.com/wpa/wp-content/uploads/2013/11/bbaria24.com_wp-content_uploads_2013_11_br-hr-10-11-13-2-.jpg?resize=105%2C70)
জানা গেছে, রোববার সকাল প্রায় পৌনে ছ’টায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শহরের টি.এ. রোডে পিকেটিং করতে আসলে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে শত শত নেতাকর্মী পাওয়ার হাউজ রোডসহ বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হয়। এসময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। প্রায় ঘন্টা খানেক ওই স্থানে সংঘর্ষ চলতে থাকে। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পাওয়ারহাউজ রোডে গাছ ফেলে ও ইট ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। প্রায় একই সময়ে গোকর্ণ রোডে শত শত হরতালকারীদের সংগে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সেখানে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ের সরকারি কলেজের সামনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। পুলিশ গুলি চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পুলিশ উত্তর মৌড়াইলের আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করে বাসাবাড়ি লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ওই এলাকায় এক ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নারী ও শিশুরা চিৎকার করতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের পাইকপাড়া, ট্যাঙ্কেরপাড়, কুমারশীল মোড়, জেলরোড, বিরাসার মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করা হয়।
![br hr 10-11-13](https://i0.wp.com/brahmanbaria24.com/wpa/wp-content/uploads/2013/11/bbaria24.com_wp-content_uploads_2013_09_br-hr-10-11-13.jpg?resize=96%2C64)
অবরোধকারীদের সরাতে গেলে পুলিশের সাথে হরতালকারীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সকাল প্রায় সাড়ে ১১টায় সহশ্রাধিক হরতালকারী একযোগে পাওয়ার হাউজ রোডে অবস্থানকারী পুলিশকে ধাওয়া করে। পুলিশ প্রথমে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যায়। এসময় পুলিশের সংগে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের সময় পুরো এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ বৃষ্টির মত রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। হরতালকারীরা ককটেল ফাটিয়ে পাল্টা জবাব দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, এসময় অন্তত শতাধিক হাতবোমার বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। হাতবোমা ও গুলির আওয়াজে টি.এ. রোড এদিকে বিক্ষুব্ধ হরতালকারীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অর্ধশত তালায় সুপার গ্লু ঢুকিয়ে অচল করে দেয়। শিমরাইলকান্দি রেল ব্রীজ এলাকা, কাউতলী ব্রীজ এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় আগুন লাগায়। ঢাকা-চট্ট্রগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলগেইটের আউটারে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ আগুন নিভিয়ে ফেলে। দুপুরে গণপুর্ত অধিদপ্তরের কাশবনে আগুন ধরিয়ে দিলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধাঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পাঘাচং স্টেশন এলাকায় রেলের স্লিপার খুলে ফেলায় বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত হয়। এদিকে গত শনিবার রাতে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
![br hr 10-11-13 4](https://i0.wp.com/brahmanbaria24.com/wpa/wp-content/uploads/2013/11/bbaria24.com_wp-content_uploads_2013_09_br-hr-10-11-13-4.jpg?resize=127%2C85) রবিবার সকালে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনসহ দুইদিনে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে হরতালের কারণে শহরের দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। এমনকি লোকাল রুটেও যান চলাচল করেনি। জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়নসহ পুলিশ ও র্যাবকে টহল দিতে দেখা গেছে। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রব বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আটক বিএনপি নেতা-কর্মীদের পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। |