প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে গত ৯ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এ পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের তিন মহিলা মেম্বার লিপি বেগম, রাশেদা বেগম ও শাহিদা বেগম। লিখিত অভিযোগ সূত্র ও তিন মহিলা মেম্বারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ইউনিয়নে চলমান স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্প (এলজিএসপি) প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় এর বরাদ্দ ১৬ লাখ টাকা থেকে একটি বিশাল অংশ আত্মসাৎ করতে চেয়ারম্যান নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ের এলজিএসপি’র আওতায় ইউনিয়নে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এ পরিষদের তিন মহিলা মেম্বারের নামে তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পে কাজ শুরুর আগেই গত ২৭ জুন ইউপি চেয়ারম্যান কৌশলে বরাদ্দের চেকগুলোতে মহিলা মেম্বারদের স্বাক্ষর নিয়ে সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলনের পর নিজের কাছে রেখে দেন। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে মহিলা মেম্বাররা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে টাকা চাওয়ায় উল্টো তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। চেক অথবা টাকা দেওয়ার কথা বলে গত ২৯ জুন এ মহিলা মেম্বারদের পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে চেয়ারম্যান ও তার অনুসারী কয়েকজন ইউপি সদস্য মারাত্মক দুর্ব্যবহার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহিলা মেম্বার রাশেদা বেগম ইউপি চেয়ারম্যানকে জুতা পেটা করার চেষ্টা করে। প্রকল্পের টাকা না পেয়ে তিন মহিলা মেম্বার ৮ জুলাই বিষয়টি জানাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসলে চেয়ারম্যানের লোকেরা তাদের লাঞ্ছিত করে। মহিলা মেম্বার শাহিদা বেগম বলেন, ইউনিয়নের কুচনী এলাকায় একটি পাকা কাজের ৯০ হাজার টাকার চেক স্বাক্ষরের পর চেয়ারম্যান নিয়ে যান। প্রকল্পের টাকা চাইতে গিয়ে এখন নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। লিপি বেগম বলেন, তথ্যসেবা কেন্দ্র উন্নয়নের জন্য এক লাখ ৬০ হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। আমি এর সভাপতি। প্রকল্পের পুরো টাকা ব্যাংক থেকে তুলে চেয়ারম্যান নিয়ে গেছেন। রাশেদা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান টাকা দিচ্ছে না প্রকল্পের কাজও করানো যাচ্ছে না। চেয়ারম্যানের হুমকির কারণে গত ৩০ জুন থেকে আমারা তিন মহিলা মেম্বারদের পরিষদে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমাকে আপত্তিকর কথাবার্তায় লাঞ্ছিত করায় চেয়ারম্যানকে জুতা পেটা করতে চেয়েছিলাম। এ ব্যাপারে নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা ওসমানী মাসুদ বলেন, এ তিন মহিলা মেম্বারদের সাথে কোন আপোষ নেই। তারা আমাকে সমাজে হেয় করেছে। তাদের চেক আমি নেয়নি। তারা টাকা উত্তোলন করেছে অথচ প্রকল্পের কাজ করছে না। টাকা ফেরতের চিঠি লিখব। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোন প্রমাণ নেই। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ডিসি স্যারের নির্দেশে নোয়াগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান ও তিন মহিলা মেম্বারের বিষয়টি নিস্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করি অচিরেই এর সমাধান হবে।
|