Main Menu

চার সিটিতে জনতার জয়

+100%-
ডেস্ক ২৪: পূণ্যভূমি সিলেটের মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। প্রায় দুই যুগ মেয়র পদে আসীন থাকা বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে ৩৩ হাজার ৩৫০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মেয়র পদে অধিষ্ঠিত হন তিনি। নানা শংকা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাকে পেছনে ফেলে বিজয়ের মালায় শিক্ত হন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। অপর তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। সিলেটে ১২৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২৬ কেন্দ্রে প্রাপ্ত ফলাফলে ১৮ দলীয় জোট প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী (টেলিভিশন) পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ভোট এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বদর উদ্দিন কামরান (আনারস) পেয়েছেন ৭২ হাজার ৬৫০ ভোট। আরিফুল হক ৩৩ হাজার ৩৫০ ভোটে এগিয়ে।

খুলনা সিটির ২৮৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩৬টির বেসরকারি ফলাফলে ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি (আনারস) পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৪৬৪ ভোট এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক (তালা) পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৪৪২ ভোট। মনি ৩৭ হাজার ২২ ভোটে এগিয়ে।

রাজশাহীতে মোট ১৩৭ কেন্দ্রের মধ্যে ১১০ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল সমর্থিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পেয়েছেন ৯১ হাজার ৪০৫ ভোট এবং অপর দিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন পেয়েছেন ৬৩ হাজার ২৯০ ভোট। বুলবুল ২৮ হাজার ১১৫ ভোটে এগিয়ে।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ১০০ কেন্দ্রের মধ্যে ৭৫ কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে ১৮ দল সমর্থিত প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৬১ ভোট এবং ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৮২ ভোট। কামাল ১১ হাজার ৭৯ ভোটে এগিয়ে।

সিলেটে ১২৮ কেন্দ্রের মধ্যে ৬২ কেন্দ্রের প্রাপ্ত বেসরকারি ফলাফলে ১৮ দলীয় জোট প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী (টেলিভিশন) পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৩১৭ ভোট এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বদর উদ্দিন কামরান (আনারস) পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৭ ভোট। আরিফুল হক ১৪ হাজার ২৬০ ভোটে এগিয়ে আছেন।

এর আগে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে ভোটগ্রহণ। শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচন চলাকালে খুলনায় একজন মারা গেছেন। বরিশালে দুই মেয়র প্রার্থীর সামনেই সমর্থকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া তেমন কেনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

চার সিটির ভোট কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রে ২৪ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে চার সিটিতে ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সব মিলিয়ে চার সিটিতে ১১৮টি ভ্রাম্যমাণ ও ৪০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে।

চার সিটিতে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৭ ঘন্টায় ভোট পড়ে প্রায় ৫৮ শতাংশ।

ইসি মনিটরিং সেল থেকে জানা যায়, বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৭ ঘন্টার রিপোর্টে দেখা যায় রাজশাহীতে ৫০ শতাংশ, খুলনায় ৬০ শতাংশ, বরিশালে ৫৭ শতাংশ এবং সিলেটে ৬০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে।

এর আগে ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টার রিপোর্টে আমরা দেখেছি রাজশাহীতে ২৮ শতাংশ, খুলনায় ২৯ শতাংশ, বরিশালে ৩৫ শতাংশ এবং সিলেটে ৩২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এই ধারা বজায় থাকলে বিকাল চারটা পর্যন্ত ৮০ শতাংশের মতো ভোট কাস্ট হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইসি সচিব।

সিলেট সিটিতে প্রতিদ্বন্‌দ্িবতা করেছেন তিনজন মেয়র প্রার্থী। এদের মধ্যে ১৮ দল সমর্থিত আরিফুল হক চৌধুরী, ১৪ দল সমর্থিত বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সালাহ উদ্দিন রিমন। ৩৬ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ১৩৯ এবং সংরক্ষিত ৩৫ জন প্রতিদ্বন্‌দ্িবতা করছেন। ৩৬ ওয়াডের্র মধ্যে ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত।

রাজশাহীতে মেয়র প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন ১৪ দল সমর্থিত এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, ১৮ দল সমর্থিত মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও স্বতন্ত্র মো. হাবিবুর রহমান। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৫৫ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ৬৬ জন। ওয়ার্ড সংখ্যা মোট ৪০টি। এর মধ্যে ৩০টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯১৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯৫ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২২ জন। ভোট কেন্দ্র ১৩৭।

বরিশাল সিটিতে মেয়র পদে ১৪ দল সমর্থিত মো. শওকত হোসেন হিরন, ১৮ দল সমর্থিত মো. আহসান হাবিব কামাল এবং স্বতন্ত্র মাহমুদুল হক খান মামুন প্রতিদ্বন্‌দ্িবতা করেছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৬ এবং সংরক্ষিত আসনে ৪৫ জন। ৪০ ওয়াডের্র মধ্যে ৩০টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার ২৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭ হাজার ৬২৫ এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩ হাজার ৬৩২ জন। ভোট কেন্দ্র ১০০টি।

খুলনায় মেয়র প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন ১৮ দল সমর্থিত মো. মনিরুজ্জামান মনি, ১৪ দল সমর্থিত তালুকদার আব্দুল খালেক এবং জাতীয় পার্টি সমর্থিত মো. শফিকুল ইসলাম মধু। ৪১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৩৭ এবং সংরক্ষিত ৪৫ জন। ৪১ ওয়াডের্র মধ্যে ৩১টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত। খুলনা সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৪ হাজার ৫০৪ এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ১৬ হাজার ৬২ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা ২৮৮টি।






Shares