সদরে জরুরী বিভাগ ফেলে প্রাইভেট চেম্বারে ডাক্তার!




ছবিটি পূর্বে প্রাইভেট চেম্বারে প্র্যাকটিসের সময়ের তোলা। প্রতিবেদনের দিনের নয়।
২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সোলাইমান মিয়া। ৩৯তম বিসিএসে স্বাস্থ্য বিভাগে যোগদান করেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে উপজেলায় তার পদায়ন হলেও সাবেক এক সিভিল সার্জনকে ম্যানেজ করে তিনি ২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের ডেপুটেশনে কর্মরত আছেন।
ডেপুটেশনে জেলার এই বৃহৎ হাসপাতালে যোগদান করলেও এক ঐশ্বরিক ছত্রছায়ায় জুনিয়র হয়েও কাউকে পরোয়া করতে নারাজ চিকিৎসক সোলাইমান। তাই নিজের খেয়াল খুশিমতো সরকারি ডিউটি না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ তার বিরুদ্ধে বহিঃবিভাগে রোগীদেরকে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে প্রাইভেট চেম্বারে যেতে বলেন, একাধিক রোগীর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত চিকিৎসকদের দুই বছর গ্রামে চিকিৎসা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেই অনুযায়ী জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা বাঞ্ছারামপুরে নিয়োগ হয় ৩৯তম বিসিএসের চিকিৎসক সোলাইমান মিয়া। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ওএসডি করা এক সাবেক সিভিল সার্জন তার মালিকানাধীন একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখার শর্তে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা থেকে ডেপুটেশনে চিকিৎসক সোলাইমানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেই হাসপাতালে সরকারি ডিউটি ফেলে বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখার অভিযোগ রয়েছে সোলাইমান মিয়ার বিরুদ্ধে। সেই সাবেক সিভিল সার্জনের দাপটে ধাবড়ে বেড়ান তিনি। সরেজমিনে এর সত্যতাও মিলেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৩০লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার আস্থার স্থল ২৫০শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। জেলার ভেতরে রাত-দিন যে কোন ঘটনা বা দূর্ঘটনায় এই হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে আসে সাধারণ মানুষ।
এই জরুরী বিভাগে রোস্টার অনুযায়ী একজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। শনিবার (১৮জুলাই) বেলা আড়াইটা থেকে সরকারি হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক সোলাইমান মিয়া। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে পাওয়া যায়নি সোলাইমানকে। হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে গিয়েও খোঁজ মিলেনি তার। বিকেল পৌনে চারটার দিকে চিকিৎসক সোলাইমান রিকশা যোগে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের গেইটে নামেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক সোলাইমান প্রতিবেদককে বলেন, এর উত্তর আমি আপনাকে দিতে বাধ্য নই। আপনাকে অনুমতি কে দিছে হাসপাতালের ব্যাপারে তদারকি করার। কিছু জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্বাবধায়কের সাথে কথা বলতে হবে।
এই বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, জরুরী বিভাগ খালি রেখে কোন চিকিৎসক যাওয়ার সুযোগ নেই। যদি কোন চিকিৎসকের জরুরি কোন কাজ থাকে তাহলে অন্য একজন চিকিৎসকে দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক সোলাইমান তার বাসায় গিয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন। তবে যদি চিকিৎসক তার পরিবর্তে অন্য চিকিৎসককে জরুরি বিভাগে দায়িত্বে না দিয়ে বাহিরে যায় তা সম্পূর্ণ অন্যায়।