ভাদুঘরে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া ৫ নারীর ওপর যুবকের হামলা, নিহত ২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া ৫ নারীর ওপর হঠাৎ হামলা করে এক যুবক। যুবকের ধারালো দায়ের কোপে ২ নারী নিহত এবং অপর ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর ছাবর বাড়ি সংলগ্ন রেললাইনের কাছে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন আরজুদা (৫০) ও রাবেয়া বেগম (৫৫)। তাদের মধ্যে আরজুদা দুপুরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে এবং রাবেয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহতরা হলেন-খালেদা বেগম (৪৪), সাজেদা বেগম (৫২), নয়ন মনি (১৪)। নিহত ও আহতরা ভাদুঘর এলাকার বাসিন্দা এবং একে অপরের প্রতিবেশী। রেললাইনের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তারা হামলার শিকার হন। হামলা থেকে তাদের বাঁচাতে গিয়ে আহত হন একই গ্রামের মোখলেছ মিয়া (৪৫)।
হামলাকারী শিহাব একই এলাকার বাসিন্দা এবং মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাকে রেললাইন সংলগ্ন জলাশয় থেকে তুলে এনে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি মোহাম্মদ এমরান হোসাইন বলেন, ‘শিহাব প্রকাশ্যে জনসমক্ষে উদ্দেশ্যহীনভাবে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আটকের পর তাকে পুলিশি হেফাজতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ গ্রামবাসীরা জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন শিহাব রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। নারীদের উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে গালিগালাজ করে। আজ কয়েকজন নারীকে একসঙ্গে হেঁটে যেতে দেখে তাদের ওপর চড়াও হয় শিহাব। হাতে থাকা দা দিয়ে তাদের কুপিয়ে আহত করে। পরে তিনি রেললাইন সংলগ্ন জলাশয়ে নেমে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। এদিকে ঢামেকে নিহত রাবেয়ার ছেলে রহিম মিয়া সদর থানার ওসিকে তার মা মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি এমরান জানান, রাবেয়ার মাথায় গভীর জখম হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া পর্যন্ত তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। হামলার ঘটনার পর থেকে শিহাবের পরিবার পলাতক আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ভাদুঘর গ্রামে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিহাবের বাবা জামাল মিয়া শহরের সমবায় মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী। ওসি এমরান হোসাইন বলেন, ‘জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।’