বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে ৫ সন্তানের জননীকে হত্যার অভিযোগ!



মিঠু সূত্রধর পলাশ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় রাহেলা বেগম (৪৫) নামে ৫ সন্তানের এক জননীকে পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী কর্তৃক স্তী খুনের অভিযোগ। শনিবার (২৪ মে) রাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী জমি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের চোখে মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুর উপজেলার বুড়বুড়িয়া নামক গ্রামে। আনুমানিক ২৫ বছরের সংসার একই জেলার নবীনগর উপজেলার রছুল্লাবাদ গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে রাহেলা খাতুনের। পারিবারিক সূত্রমতে, ২৫ বছর আগে পারিবারিকভাবে রাহেলার বিয়ে হয় পাশ্ববর্তী উপজেলা বাঞ্চারামপুরের বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আপন ফুফাতো ভাই ওয়াজেদের সাথে। বিয়ের পর থেকেই নানান বিষয়ে সাংসারিক ঝামেলা লেগেই থাকতো! এরমধ্যে রাহেলা চার কন্যা ও এক ছেলে সন্তানের মা হয়।
বছর তিনেক আগে একমাত্র ছেলে ইউসুফ ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে, বাবা মা’র অগোচরে বিয়ে করে। বিয়ের পরপর ছেলেকে ছেলের বৌসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয় রাহেলার স্বামী ওয়াজেদ। এই নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগে থাকতো। বরাবরের মতো গত ২৩ মে দিনভর রাহেলা ও স্বামী ওয়াজেদের মধ্যে তুমুল কথা কাটাকাটি ও একপর্যায়ে রাহেলাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া যায় বাড়ির আশেপাশের লোকজনের কাছে। ২৪ মে সকাল থেকে রাহেলাকে খোঁজে না পাওয়ার কথা জানান রাহেলার স্বামী ও শ্বাশুড়ি। পরে অনেক খোঁজাখুজির পর দুপুর আনুমানিক ৩-টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ধইনচা ক্ষেতে রাহেলার লাশ পড়ে থাকতে দেখে রাহেলার একমাত্র ছেলে ইউসুফ। লাশের পাশে কেড়ির বড়ি রাখা!
পরে পুলিশ এলে, পুলিশ লাশের সাময়িক তদন্তে দেখতে পায় লাশের চেহারা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত রয়েছে। চোখেও আঘাতের চিহ্ন!
এতে করে রাহেলাকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ি মিলে খুন করেছে বলে ধারণা এলাবাসী অনেকেই। রাহেলার নিখোঁজের খবরে ছুটে যাওয়া রাহেলার ছোটভাই দানেশ মিয়া জানায়, আমার বোনের জামাই ওয়াজেদ ও তার মা মিলে আমার বোনকে বিভৎসভাবে খুন করে কেড়ির বড়ি খেয়ে মারা গেছে বলে চালিয়ে দিতে চায়! আমরা খুনি ওয়াজেদ ও তার মা’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে বাঞ্চারামপুর থানায় যোগাযোগ করা হলে জানান, লাশ থানায় এনে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং স্বামী ওয়াজেদকে গ্রেফতার করে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও লিখিত অভিযোগের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।