Main Menu

আল্লাহ মহান সৃষ্টিকারী, তিনি পালনকর্তা এবং তিনিই একমাত্র রব-প্রতিপালক। পৃথিবীর সব কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন এবং তার নির্দেশনায় সব কিছু সংগঠিত হয়। রাত-দিন সবই আল্লাহ মহানের সৃষ্টি। ভালো-মন্দ একমাত্র তারই নিয়ন্ত্রণে আবর্তিত হয়। বারো মাস সৃষ্টি করে আল্লাহ মহান যেমন রমজানকে শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনি সব দিনের মাঝে দশটি দিনকে বছরের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কোন দশদিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশদিন? পবিত্র কুরআনে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, ‘কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের।’ [সূরা আল-ফাজর, আয়াত : ১-২] উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ মহান ‘দশ রাতের কসম’ বলে আরবি জিলহজ মাসের দশদিনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। সব বিজ্ঞ মুফাসসির এই ব্যাপারে একমত। এছাড়া বিখ্যাত মুফাসসির ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘এ মতটিই সবার পছন্দ এবং এটিই সঠিক মত’।

জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিন: এই দশদিনে কী কী আমল করতে হয়?

+100%-

আল্লাহ মহান সৃষ্টিকারী, তিনি পালনকর্তা এবং তিনিই একমাত্র রব-প্রতিপালক। পৃথিবীর সব কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন এবং তার নির্দেশনায় সব কিছু সংগঠিত হয়। রাত-দিন সবই আল্লাহ মহানের সৃষ্টি। ভালো-মন্দ একমাত্র তারই নিয়ন্ত্রণে আবর্তিত হয়। বারো মাস সৃষ্টি করে আল্লাহ মহান যেমন রমজানকে শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিয়েছেন, তেমনি সব দিনের মাঝে দশটি দিনকে বছরের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

কোন দশদিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশদিন?

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেন, ‘কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের।’ [সূরা আল-ফাজর, আয়াত : ১-২] উল্লেখিত আয়াতদ্বয়ে আল্লাহ মহান ‘দশ রাতের কসম’ বলে আরবি জিলহজ মাসের দশদিনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। সব বিজ্ঞ মুফাসসির এই ব্যাপারে একমত। এছাড়া বিখ্যাত মুফাসসির ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘এ মতটিই সবার পছন্দ এবং এটিই সঠিক মত’।

হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীর দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন। [মুসনাদ বাযযার : ১১২৮; মুসনাদ আবী ইআলা : ২০৯০]

পবিত্র কুরআন ও হাদিসে রাসূলের (সা.) বর্ণনা থেকে এ কথা প্রতীয়মান যে, আরবি জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন বছরের শ্রেষ্ঠ দশ দিন।

কেন এই দশটি দিন শ্রেষ্ঠ?

বিভিন্ন কারণে এই দশটি দিনকে বছরের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কোরআন-হাদিসের আলো যে সব কারণে এই দশটি দিনকে বছরের শ্রেষ্ঠ দিন বলা হয় তা হলো- ১. আল্লাহ মহান এই দিনগুলোর কথা উল্লেখ করে কসম খেয়েছেন। ২. রাসূল (সা.) এই দশটি দিনকে শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ৩. এই দশদিনের মাঝে রয়েছে ঐতিহাসিক আরাফাহ দিবস। ৪. এই দশদিনে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে কুরবানির আমল। ৫. এই দিনগুলোতে আল্লাহ মহান তার জিকিরের প্রবর্তন করেছেন।

এই দশদিনে কী কী আমল করতে হয়?

হজরত ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যার আমল জিলহজ মাসের এই দশ দিনের আমল থেকে আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। [বুখারী : ৯৬৯; তিরমিজি : ৭৫৭]

এই দশদিনে যেসব আমল করা যেতে পারে- ১. পবিত্র হজ ও ওমরা পালন করা- হজরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘এক উমরা থেকে আরেক উমরা এতদুভয়ের মাঝের গুনাহগুলোর কাফফারা এবং মাবরূর হজের প্রতিদান কেবলই জান্নাত।’[বুখারী : ১৭৭৩; মুসলিম : ৩৩৫৫]

২. সিয়াম বা রোজা রাখা- হজরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, সিয়াম বা রোজা ছাড়া আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য; শুধু সিয়াম বা রোজা ছাড়া। কারণ, তা আমার জন্য। তাই আমিই এর প্রতিদান দেব। সিয়াম বা রোজা ঢাল স্বরূপ।’[বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ২৭৬২]

৩. তাকবির ও তাহমিদ এবং তাসবিহ ও তাহলিল পাঠ করা- হজরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, ‘এ দশ দিনে নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় ও মহান কোনো আমল নেই। তাই তোমরা এ সময়ে তাহলিল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবির (আল্লাহু আকবার) ও তাহমিদ (আল-হামদুলিল্লাহ) বেশি বেশি করে পড়।’[বাইহাকী, শুআবুল ঈমান : ৩৪৭৪; মুসনাদ আবী আওয়ানা : ৩০২৪]

৪. কুরবানী করা- এ দিনগুলোর দশম দিন সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। কেউ কেউ বলেছেন কুরবানি করা ওয়াজিব। কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর নবীকে কুরবানি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত বা নামাজ আদায় করুন ও কুরবানি করুন।’ {সূরা আল-কাউসার, আয়াত : ০২}

৫. বিভিন্ন আমল- এছাড়া এই দশদিনে ফরজ নামাজ গুরুত্বের সাথে আদায় করা, রাতে-দিনে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা। দান-সদকাহ বেশি বেশি করা। জিলহজের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানির পূর্ব পর্যন্ত নখ, মাথার চুল, গোঁফ, নাভি ও বগলের নিচের পশম না কাটা ইত্যাদি আমল অনুমোদিত।






Shares