Main Menu

নবীনগরে ড্রেজারের পানিতে রাস্তা-ঘাট ডুবে শতশত মানুষ পানি বন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন

+100%-

মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর প্রতিনিধিঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের পৌরএলাকার ভোলাচং গ্রামে মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে একটি অসাধু চক্র সরকারি জায়গা ভরাট করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ভরাটের ফলে ওই এলাকার জনসাধারনের চলাচলে সরকারি রাস্তা ও বসত বাড়ির শতশত মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,নবীনগর পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ায় কাদির মিয়া নামে এক ড্রেজার ব্যাবসায়ী নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে ভোলাচং চৌধুরী পাড়া মোহাম্মদীয়া আরাবীয়া জামে মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে নবীনগর টু কম্পানিগঞ্জ সড়কের সড়ক ও জনপদের জায়গা সহ এলাকার অনেক ফসলি জমি,ডোবা ভরাট করে ফেলছে। এতে করে এলাকার অনেক রাস্তা ও বসত বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসিরা জানান, মসজিদের জায়গা ভরাটের নামে ড্রেজার ব্যাবসায়ী কাদির মিয়া সরকারি জায়গা সহ এলাকার আনেক ফসলি জমি,ডোবা,নালা ভরাট করে ফেলেছে। এখন এলাকার অনেক রাস্তা ও আমাদের বাড়ি ঘর এই ড্রেজারের পানিতে ডুবে আছে। গত একমাস যাবত এই পানি বন্দি অবস্থায় আমরা এখানে মনবেতর জীবনযাপন করছি। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় প্রাচীন ভোলাচং বাজারের ব্যাবসায়ীরা জানান,গত দের মাস যাবত বাজারের তিনটি সড়কে ড্রেজারের পাইপ ফেলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী করে রেখেছে। প্রশাসনের লোকজন এসে এই পাইপ সরানোর কথা বলে গেলেও তারা প্রশাসনকে উপেক্ষা করে এই বালুর ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কাউন্সিলর ও ভোলাচং বাজারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জানান, ড্রেজারের মালিক কাদির মিয়াসহ আরো কয়েকজন আমাদের কাছ থেকে দুই তিনদিনের জন্য অনুমতি নিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যঘাত ও রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তার উপর পাইপ দিয়ে এলাকায় সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা বালি ভরাটের কাজ করে।এতে করে এলাকার অনেক রাস্তা ও বাড়িতে ড্রেজারের পানি আটকে সাধারণ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রায় দেড় মাস যাবত পাইপ গুলো তুলে নিয়ে যাবে বলে আমাদের সাথে তারা টালবাহানা করছে। মসজিদের জায়গায় বালু ভরাটের কথাও কেউ আমাদেরকে জানায়নি। গত এক সাপ্তাহ আগে এসিল্যান্ড মহোদয় এসে পাইপগুলো বাজার থেকে তুলে নেওয়ার জন্য বল্লেও তারা এখন পর্যন্ত উঠায়নি। অথচ তারা উল্টো মসজিদের জায়গায় বালু ফেলতে দিচ্ছেনা বলে একটি রিউমার ছড়িয়ে এলাকায় হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর উপক্রম করেছে, যাহা অত্যন্ত দুঃখজনক।

পৌর এলাকার আরেক কাউন্সিলর আল মামুন বলেন, প্রশাসনের কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে মসজিদের নাম ভাঙিয়ে সরকারি অনেক জায়গা ও খাল ভরাট করছেন। এতে করে এলাকাটিতে মানুষ পানিবন্ধী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যাবসায়ী কাদির মিয়া বলেন, এতোদিন ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা ভরাট করেছি,এখন মসজিদের জায়গা ভরাট করছি। মসজিদের জায়গাটি ভরাট করতে দুদিন লাগবে। তারপরে আমি ড্রেজার সরিয়ে নিবো।

এ বিষয়ে নবীনগর পৌরসভার মেয়র এড.শিব শংকর দাসের সাথে মুঠয়ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য যে, ভোলাচং চৌধুরী পাড়া মোহাম্মদীয়া আরাবীয়া জামে মসজিদের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করার নামে গত দেড় মাস যাবত এলাকার প্রভাবশালী ড্রেজার ব্যাবসায়ী কাদির মিয়া সহ বেশ কয়েকজন ভোলাচং বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যঘাত ও রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তার উপর পাইপ দিয়ে এলাকায় সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা বালি ভরাটের কাজ করে আসছে। এতে বাধা দিলে এলাকায় মসজিদের জায়গায় বালু ফেলতে দিচ্ছেনা বলে একটি ধর্মিয় উস্কানিমূলক রিউমার ছড়িয়ে এলাকাটিতে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর পরিস্থীতি সৃষ্টি করেন। পরে গত ৯ আগষ্ট সন্ধ্যায় নবীনগর পৌর সভার মেয়র এড. শিব শংকর দাস সংবাদ সম্মেলনে ডেকে পরিস্থীতি শান্ত করেন। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি সহ সকল কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.সফিকুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ হোসেন,সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আল রোমান সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।






Shares