কথা রাখলেন নবীনগরের ইউএনও, ঘুরে দাঁড়ালো হামিদার পরিবার
মিঠু সূত্রধর পলাশ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকা খাজানগর গ্রামে বস্তিতে ভাড়া করা বাসায় থাকেন রিকশাচালক লিল মিয়া। জীবনের ৩০টি বছর ধরে দুই চাকার প্যাডেল চেপে পরিবারের ভরণ পোষণ করে যাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন আড়াইশো টাকায় গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চারশ থেকে পাঁচশ টাকার বেশি উপার্জন কখনোই হতো না তার। মাস শেষে বাড়িওয়ালাকে ঠিকমতো বাড়ী বাড়াও পরিশোধ করতে পারতেন না। জীর্ণশীর্ণ এই মানুষটিকে আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য পরিবারে উপার্জনক্ষম দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি নেই। এরই মধ্যে তার স্ত্রী হামিদা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুশয্যায়। অসহায় এই মানুষটির পাশে অবশেষে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে একটি রিক্সা উপহার দেন। এসময় রিক্সার চাবি হাতে পেয়ে অসহায় লিল মিয়া অশ্রুসিক্ত দুচোখ গড়িয়ে পড়া জলে ছিল ইউএনও প্রতি কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসার চরম অভিব্যক্তি প্রকাশ । যোগদানের পর থেকে এমনিভাবে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমেই একরামুল ছিদ্দিক বুঝিয়ে দিচ্ছেন মানুষের জন্যই প্রশাসন। দেখিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের মানবিক রুপ।
নবীনগর উপজেলায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অসহায় মানুষের টেকসই কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন, তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এনে অসহায়ত্বের লাঘব করছেন। বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার সহায়তা ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নেও অনেক মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক বলেন, আর্থিক সাহায্য কখনোই টেকসই হয় না, কারণ দু চারদিনের মধ্যেই এ টাকা শেষ হয়ে গেলে তাকে আবার অসহায় দিনাতিপাত করতে হয়। এ জন্যই শুরু থেকেই সমাজের প্রান্তিক মানুষটিকে যেনো আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হয়ে জীবনধারণ করতে না হয় সেজন্য তাদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের দিকেই সবচেয়ে বেশি নজর দেয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত,এরআগে লিল মিয়ার স্ত্রী হামিদা বেগমের একটি কিডনি বিকল সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। বিষয়টি দেখে তার চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উন্নত চিকিৎসার নগদ অনুদান,এক মাসের খাদ্য সামগ্রী এবং চলাচলের জন্য একটি হুইল চেয়ার উপহার দিয়েছিলেন ইউএনও ।এবং তার স্বামীকে স্বাবলম্বী করতে একটি রিক্সা উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।