Main Menu

সু চির প্রতিনিধির সফরে আশা দেখছে সরকার

+100%-

DAKHINPARA, BANGLADESH – SEPTEMBER 12: A young Rohingya man carries an elderly woman, after the wooden boat they were travelling on from Myanmar, crashed into the shore and tipped everyone out on September 12, 2017 in Dakhinpara, Bangladesh. Recent reports have suggested that around 290,000 Rohingya have now fled Myanmar after violence erupted in Rakhine state. The ‘Muslim insurgents of the Arakan Rohingya Salvation Army’ have issued statement that indicates that they are to observe a cease fire, and have asked the Myanmar government to reciprocate. (Photo by Dan Kitwood/Getty Images)

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিও তিন্ত সোয়ে। রবিবার মধ্যরাতে তার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তার সফরকে ঘিরে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটি পথ বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছে সরকার।

সম্প্রতি রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতার পর সেখানকার পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ কারণে সু চির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চি তার মন্ত্রী তিন্ত সোয়েকে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন।

সফরকালে তিন্ত সোয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে মিয়ানমারের মন্ত্রী তার দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখার জন্য কক্সবাজার যাবেন না। যদিও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে মিয়ানমারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল।

সীমান্ত চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের জেরে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে। রাখাইনে আরও আড়াই লাখ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এদিকে সু চির প্রতিনিধির এই সফরকে ঘিরে সংকট সমাধানের একটি পথ বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। তারা আশা করছেন, আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার কিছুটা হলেও নমনীয় হয়েছে, সামনে আরও নমনীয় হবে। প্রতিনিধি দল পাঠানো সে ইঙ্গিতই বহন করছে।

জানা গেছে, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাঁচটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হবে৷ অবিলম্বে রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করা, মানবিক সহায়তা, সেফ জোন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই পাঁচটি প্রস্তাবই তুলে ধরেছেন৷ তবে দ্বিপক্ষীয় হিসেবে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নই গুরুত্ব পাবে সবচেয়ে বেশি৷

পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সংবাদ মাধ্যমে গত সপ্তাহে বলেছেন, মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হবে৷ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি৷ জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করেছে বাংলাদেশ৷ বৈঠকে ওই রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ৷

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রবিবার টেকনাফে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশে আসছেন। আশা করা হচ্ছে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের সম্মান দিয়ে দেশে ফিরিয়ে নেবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত যেভাবে বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে, একইভাবে চীন এবং রাশিয়াও বাংলাদেশে পাশে থাকবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

রবিবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেছেন, রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হয়ে তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ একান্ত মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের দেশে ফিরে যেতে হবে। এর জন্য জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, মিয়ানমার সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছেন। আশা করা হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকটের একটি সম্মানজনক সমাধান হবে।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে তাদের অন্ন-বস্ত্র, আবাসন ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকবে। তাদের সাথে মানবিক আচরণ অটুট থাকবে।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আজ ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে চাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা নিজ দেশে জাতিগত নিধনের শিকার হচ্ছেন। স্থান ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা পাঁচ লাখের বেশি মিয়ানমার নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছি। ইতোমধ্যেই বিগত তিন দশকে মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে থাকা সত্ত্বেও মানবিক কারণে আমরা নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দিয়েছি।’






Shares