৫৪ বছরে কোনো সরকারই মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারেনি- কসবায় জামায়াত প্রার্থী আতাউর



রুবেল আহমেদ॥ জামায়াত ইসলামী মহানগর উত্তর প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক, কসবা-আখাউড়া সংসদীয় আসনে জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার বলেন, ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতা ও বিল্পবী নেতৃবৃন্দ এই ম্যাসেজটাই দিয়েছে, বিগত ৫৪ বছর এই বাংলাদেশে যারা শাসন করেছে, ৫৪ বছরের শাসনের দায়িত্ব পালনকালে দেশের মানুষকে তাদের যে অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা ছিলো তা তারা দিতে সম্পুর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার উপর দাড়িয়ে তৈরি হয়েছে ৫ আগষ্ট। সোমবার সন্ধ্যায় মাগরিব নামাজের পর উপজেলা জামায়াত ইসলামীর আয়োজনে উপজেলা মডেল মসজিদ হল রুমে কসবায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ৫৪ বছরের শাসনকারীদের ব্যর্থতার কারনে আজকে মানুষের ঘুম হারাম, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো ফিরে পাচ্ছেনা। আজকে সবখানেই একটা বৈষম্য। ৫ আগষ্ট বিল্পটাই ছিলো “ উই ওয়ান্ট জাস্টিস”। অর্থাৎ আমরা সব জায়গায় ন্যায় বিচার চাই। সব জায়গায় আমরা ইসলাম চাই। সব জায়গায় ভারসাম্যহীনতা নয় ভারসাম্য পূর্নতা চাই। এই বিল্পবের মুল ম্যাসেজটা ছিলো, আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ চাই, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার বাংলাদেশ চাই। যে বাংলাদেশে মানুষের অধিকারের জন্য জীবন দিতে হবে না।
তিনি বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে কারো কাছে হাত পাততে যেন না হয়, কোনো ব্যবধান যেন না থাকে। গত ৫৪ বছরে দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা পুরোটাই ভেংগে দেয়া হয়েছিলো। যেখানে হাত দিবেন সেখাইে সমস্যা। প্রশাসনিক ব্যবস্থাটাকে ভেংগে চুরমার করে দেয়া হয়েছিলো। পেছনের চিলকুট দিয়ে বিচারের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। যেভাবে বিচার করার কথা ছিলো সেভাবে বিচার করা হয়নি। তাই বিচারের নামে প্রহসন করে জামাতের শীর্ষস্থানীয় ৫ জন নেতাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। এছাড়াও জামাতের আরও শীর্ষস্থানীয় ৬ জন নেতাকে কারাগারে জীবন দিতে হয়েছে।
আতাউর রহমান সরকার আরও বলেন, যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, অধিকার আদায়ের কথা বলেছে তাদেরকে গুম করা হয়েছে। আজও পর্যন্ত তাদের লাশ পরিবার ফেরত পায়নি। অধিকার আদায়ের কথা বলতে গিয়ে জামায়াতের ৫ শতাধিক নেতা খুন করা হয়েছে। কয়েক লক্ষ নেতাকে কারাগারে দেয়া হয়েছে। জামায়াত ইসলামীর অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রাটা এমন ছিলো যে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীরা ঘর-বাড়ি ছাড়া ছিলো। চাকুরী,ব্যবসা-বানিজ্য ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। এভাবে বাংলাদেশে একটা অমানবিক পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিলো। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদিকে সাজানো মিথ্যা মামলায়, মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়ে প্রহসনের মাধ্যমে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছিলো। প্রতিবাদ করায় দুই দিনে ১ শ ৭৫ জন জামায়াতের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিলো। যাকে পেয়েছে তাকেই নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৫৪ বছরে তারা দেশটাকে ধ্বংসস্তুপে ধার করিয়েছে। এই ভাংগাচুড়া রাষ্ট্রটাকে মেরামত করার জন্য আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে দেশ গঠনে কাজ করতে চাই।
তিনি বলেন, এই উপজেলায় মাদক চোরাচালান বেড়েছে। এর জন্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই জড়িত। ৫ আগস্টের আগে ছিলো এক দল। ৫ আগষ্টের পর অন্য একটা রাজনৈতিক দল এটার সাথে জড়িত। কসবা-আখাউড়ার যুব সমাজকে যদি মাদকের হাত থেকে বাচাতে সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির আহবান জানান তিনি। তিনি সাংবাদিকদের পাশে থাকার আশ^াস দেন।
উপজেলা জামায়াত ইসলামীর আমির ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা শিবলী নোমানী, উপজেলা জামায়াত ইসলামীর এসিষ্ট্যান্ট সেক্রেটারী এ কে আজাদ মানিক, উপজেলা জামায়াত ইসলামীর মিডিয়া ও প্রচার সম্পাদক কবির আহাম্মদ সরকার ও কসবা পৌর জামায়াত ইসলামী আমির হারুনুর রশিদ প্রমুখ। এসময় কসবা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দসহ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।