বাঁচতে চায় কিডনী রোগে আক্রান্ত ইয়াছিন



ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ইয়াছিন মিয়া (২৬) নামে এক অসুস্থ কিডনী রোগীর পাশে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠন নামে একটি সামাজিক সংগঠন। সোমবার বিকেলে উপজেলার আকছিনা গ্রামের অসুস্থ ইয়াছিন মিয়ার বাড়িতে এই সহায়তা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সহায়তা অনুষ্ঠানে অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠন সভাপতি আশফাতুল হোসেন ভ’ইয়া এলমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কসবা মহিলা ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ তসলিম মিয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি মোঃ সাদ্দাম হোসেন, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ কেফায়েত উল্লাহ, ছাত্রদল নেতা আশিক মাহমুদ প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠন সাধারন সম্পাদক সজিব রানা।
ইয়াছিনের পিতা ফিরোজ মিয়া জানান, প্রায় তিন বছর আগে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে বাম পায়ে চোট পায় ইয়াছিন। সেই চোটের কারনে ইয়াছিনের পায়ে সমস্যা তৈরি হয়ে পায়ের হাটুর নিচের অংশে রক্ত চলাচল কমে যায়। পরে বিজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলে সেই চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান হাটুর নিচের অংশ কেটে ফেলতে হবে। অন্যথায় পায়ে পচন ধরে গেলে পুরো পা কেটে ফেলতে হবে। পরে অপারেশন করে ইয়াছিনের বাম পা হাটুর নিচে কেটে ফেলা হয়। পায়ের অপারেশনের পর থেকে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবন করতে হয়েছে। সেই ব্যাথানাশক ট্যাবলেট সেবনে মনের অজান্তেই আরেক মরণ ব্যধি বাসা বাধে তার ছেলে ইয়াছিনের জীবনে। ধীরে ধীরে তার অসুস্থতা বেড়ে গেলে তাকে আবারও নেয়া হয় চিকিৎসকের নিকট। সেখানে পরীক্ষায় ধরা পড়ে অতিরিক্ত ব্যথানাশক সেবনে ইয়াছিনের দুটি কিডনী বিকল হয়ে গেছে। চিকিৎসক জানায় তাকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে কমপক্ষে একটি কিডনী প্রতিস্থাপন করতে হবে, না হয় যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তাকে সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে হবে। এতদিন অনেক দুঃখ কষ্টে ও আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের সামান্য সহায়তায় সামান্য চিকিৎসা চালালেও সবকিছু নিশে^স হয়ে দেয়ালে পিঠ থেকে গেছে ফিরোজ মিয়ার। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে লেগে যায় ১৪/১৫ হাজার টাকা। চোখের সামনে আদরের ছোট সন্তানকে অকালে হারাতে হবে একথা মনে হলেই পৃথিবীটা অন্ধকার মনে হয়। তিনি সন্তানকে বাঁচাতে বর্তমান সরকারসহ দেশ-বিদেশের বিত্তবান ও হৃদয়মান মানুষদের সাহায্য কামনা করেন।
সহায়তা অনুষ্ঠানে অতিথিগন বলেন, ছোটকালে মা হারানো ইয়াছিনের দরিদ্র বাবা ছাড়া কেউ নেই তার আপনজন। দুই ভাই থাকলেও দরিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত। আদরের ছোট সন্তানকে নিজের কিডনী দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে চান এক বৃদ্ধ পিতা। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারার কারনে অকালে নিভে যাচ্ছে ইয়াছিন নামের একটি জীবন প্রদীপ। দেশের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষ এবং প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধা ভাইয়েরা যদি দরিদ্র পরিবারের সন্তান এই ইয়াছিনের প্রতি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে আপনাদের চেষ্টায় আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে বেঁচে যাবে ইয়াছিন। ইয়াছিনকে বাঁচাতে সকলে মিলে সাহায্য করুন। দশের সাহায্যে বেঁচে থাকুক ইয়াছিন। বিত্তবান ও প্রবাসীদের নিকট অনুরোধ করেন অতিথিগন। পরে অগ্রভাগীয় সাহিত্য সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিথিগন অসুস্থ ইয়াছিনের নগদ ১০ হাজার তুলে দেন।
দেশের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষ এবং প্রবাসে থাকা দেশের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের কাছে অসুস্থ ইয়াছিনের আকুতি, আমি অকালে মরতে চাইনা, আমি বাঁচতে চাই। সকলে মিলে আমাকে বাঁচতে সাহায্য করুন। আপনাদের ক্ষুদ্র সহায়তা আমাকে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে। আপনারা আল্লাহর দয়ায় আমাকে বেঁচে থাকতে দিন। আমার বাবা আমাকে কিডনী দিলেও চিকিৎসা করার সামর্থ আমার বাবার নেই। আমাকে সাহায্য করুন এই বিকাশ নাম্বারে ০১৩১৭২৯২৬৩৫ ।