জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে- আতাউর রহমান



রুবেল আহমেদ ॥ ঢাকা মহানগর (উত্তর) বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির কেন্দ্রিয় সাবেক অফিস ও প্রচার সম্পাদক, কসবা-আখাউড়া উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান এবং কসবা-আখাউড়া সংসদীয় আসনের বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মোঃ আতাউর রহমান সরকার বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অগ্রসেনানী আমীরে জামাত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতের প্রথম সারির ১১ জন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে বিচারের নামে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং বাকি ৬ জনকেও কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে ফ্যাসিবাদ সরকার। বুধবার (১১ জুন) রাতে উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ বাজারস্থ ইসলামী পাঠাগার ও সমাজ কল্যান পরিষদের আয়োজনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের দায়িত্বশীল সাথী প্রয়াত মোঃ মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার স্মরণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের এমন কোনো এলাকা ছিলোনা বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়নি। চাকুরী ও ব্যবসা বানিজ্য কোন কিছুই তারা করতে পারেনি। হাজার হাজার নেতাকর্মীরা ব্যবসা বানিজ্য ও চাকুরী হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছিলো। অনেককে দেশান্তরীও হতে হয়েছে।
তিনি বলেন, এখনো আমাদের অনেক ভাই গুম রয়েছে। আমাদের প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সাড়ে চার হাজারেরও বেশী নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দিয়েছে। আজকে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিচারের প্রতিবাদ করায় ১/২দিনে ১৭৫ জন নারী-পুরুষকে তারা পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। এভাবে সারা বাংলাদেশে তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভয় দেখিয়ে আমাদের কণ্ঠরোধ করে তারা সাড়ে ১৫টি বছর তারা হত্যা ও নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছে। তারা শাপলা চত্বরে আলেম ওলামাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে অনেক আলেম ওলামাকে হত্যা করেছে। পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে, ২০১৪ সালে বিনাভোটের মাধ্যমে, ২০১৮ সালে রাতের ভোটের মাধ্যমে এবং ২০২৪ সালে মামু এবং খালু উভয়ে মিলে নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে তারা সাড়ে ১৫টি বছর দেশের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিলো। তাদের শাসনামলে আমাদের মৌলিক যে অধিকারটুকু ছিলো তা আমরা পাই নাই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাড়ে ১৫ বছর একটি মিনি ক্যান্টণমেন্টে পরিণত করা হয়েছিলো। তিনি আরও বলেন, ৫ আগষ্টের পরেও আমাদের দেশে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় কসবা-আখাউড়ায় মাদক চোরাচালান বেড়েছে। সন্ধ্যা হলেই উপজেলার হাকর ও গঙ্গানগর এলাকায় ট্রাকে করে মাদক পাচার করা হচ্ছে। কারা এবং কোন রাজনৈতিক নেতারা জড়িত তা প্রশাসন কি জানেন না ? সাড়ে ১৫ বছর যে যন্ত্রনা আমরা পেয়েছি এখনো যদি সেই যন্ত্রনা পোহাতে হয় তাহলে পরিবর্তন করে আমরা কি পেলাম। এতে করে এটাই প্রতিয়মান হয় যেখানে আল্লাহর আইন থাকবেনা, সৎ লোকের শাসন ও নেতৃত্ব থাকবেন সেখানে এ ধরনের অরাজকতা চলতেই থাকবে। যদি এই দেশটাকে আমরা সুন্দর ভাবে সাজাতে চাই তাহলে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে।
ব্র্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াত ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য কাজী মোঃ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা জামায়াত ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা শিবলী নোমানী, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী মাওলানা গোলাম সরোয়ার, বিনাউটি ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারী আবদুল হালিম মোল্লা ও ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সৈয়দাবাদ গ্রামের সন্তান মরহুম জোবায়ের ওমর খানের পিতা এডভোটেক জাহাঙ্গীর আলম খান প্রমুখ।
২ নং ওয়ার্ড টিম লিডার আশরাফ সুমনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সৈয়দাবাদ ইসলামী পাঠাগার ও সমাজ কল্যান পরিষদের কোষাধ্যক্ষ নেয়ামত উল্লাহ খান, ইসলামী পাঠাগার ও সমাজ কল্যান পরিষদের প্রচার সেক্রেটারী মোঃ আরাফাত ভূইয়া, ২ নং জামায়াত ইসলামী সভাপতি হাবিবুর রহমান ভুইয়া টিপু, সিরাজুল ইসলাম ও রুহুল আমিনসহ অন্যরা। এসময় জামায়াতে ইসলামী উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মী সহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।