Main Menu

বিজয়নগরে বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

+100%-

মো,জিয়াদুল হক বাবু : ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ও পত্তন ইউনিয়নের হলিয়াজুড়ি নদী (খালদ্ধ বিল) এর বুকে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী মৎস্য ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে। এলাকাবাসির অভিযোগ উন্মুক্ত জলাশয়ে সেতুর নিচে নৌকা চলাচল বন্ধ করে বাঁশের বেড়া ও লোহার জ্বাল দিয়ে মাছ চাষ করায় হারিয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের দেশিও প্রজাতির মাছ।

সরজমিনে গেলে একাধিক লোক জানান, বাপ দাদার আমল থেকে এ এলাকার লোকজন এই মোসুমে বাড়ির সামনের খাল থেকে মাছ ধরে আসছিল কেউ বাধা না দিলেও গত কয়েকদিন আগে ইজারাদার ইকবাল মিয়ার পক্ষ থেকে এ বছর যেন এই খাল থেকে মাছ শিকার না করে জানিয়ে দেওয়া হইছে, কারন এই খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে সেইখানে মাছ চাষ করবে নতুন ইজারাদাররা তাই স্থানীয় কেউ মাছ ধরতে পারবে না। বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের নোয়াগাঁও মোড় থেকে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে যেতে বহমান হলিয়াজুড়ি (খালদ্ধ বিল) নামে যার পরিচিতি। খালটি উপজেলার চম্পকনগর থেকে শুরু হয়ে ছোট ছোট খালে সংযুক্ত হয়ে ভারতে গিয়ে প্রবেশ করেছে। ৭ কি:মি এই খালটি দীর্ঘদিন ধরে মাছের জন্য উন্মুক্ত জলাশয় হিসাবে দেখে আসছে স্থানীয় লোকজন। এ অবস্থায় দুই ইউনিয়নে যাওয়ার মধ্যে রাস্তার সেতুতে মাছ চাষ করার জন্য স্থানীয় পত্তন ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ইকবাল মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী নদীর বুকে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশ ও লোহার মধ্যে জ্বাল দিয়ে সেতুর নিচে বাঁধ দিয়ে বেড়া দিয়েছেন। সেই বাঁশের বেড়ার উপরের অংশে অবৈধ কারেন্ট সুতার জাল দেওয়া হয়েছে। এতে লোহার তৈরী জ্বালের সাথে পানি বাধাগ্রস্থ হয়ে এপাশের মাছ অন্য পাশে যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় হুমকির মুখে পড়ছে ছোট বড় নানা প্রজাতি ডিমওয়ালা দেশিও প্রজাতির মাছ। এমনি এই ব্রিজটি দিয়ে সবসময় ছোট বড় নৌকা চলাচল করলেও এখন বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার ফলে নৌকা চলাচলেও বাঁধা সৃষ্টি হবে।

এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতিতে এখন বর্ষাকাল। এসময় দেশিও প্রজাতির মাছ বংশ বিস্তার করে। এসময় বাধ দেওয়া অবৈধ। এতে নদীর দেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ উন্মুক্ত ভাবে বিস্তার লাভ করতে পারে না। ফলে নদী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশিও প্রজাতির সিং. মাগুর, টেংরা, বোয়াইল, পাবদা, পুটি, কই, চিংড়িসহ নানা প্রজাতিয় মাছ।

গত ২০১৮-১৯ সালের দুই বছরের জন্য ২লাখ টাকায় এই খালটি সরকার থেকে ইজারা বাবদ এনেছিলেন স্থানীয় ইলিয়াস মিয়া নামের এক লোক তার সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে ইলিয়াস মিয়া বলেন, এবছর যেলোক সরকার থেকে টাকা দিয়ে খালটি এনেছে সেইলোক কোন ভাবেই পানি আসার আগেই বাঁধ দিতে পারেনা। কারন পানি শেষ হলেই তার অধিকার আছে বাঁধ দেওয়ার তাও পানি শেষ হওয়ার এক থেকে দুইমাস আগে বাঁধ দিতে পারবে তারআগে সবাই এই খাল থেকে মাছ শিকার করতে পারবে। কিন্তু এখন ৬ মাস আগেই তিনি বাঁধ দিয়ে মাছ পালন করছে এইটা বেআইনি ভাবেই করছে বলে তিনি দাবী করেন।

এ বিষয়ে মাছ প্রজেক্টের মালিক ইকবাল মিয়া বলেন, সরকারী খাল থেকে মাছ মারা কি নিষেধ, আমি সেটা জানিনা। ইজারা নিয়েছি আমার টাকা উঠাতে হবে। আর আমি পত্তন ফিসারীজ,কাজলিয়া গ্রুপ ফিসারিজ ও আলিয়াজুরী ফিসারীজ এর মাধ্যমে মাছ ব্যবসা করি এবং সরকারের কাছ থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে ৬ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি। কাগজ দেখে আমি সবকিছু বলতে পারব এবং ইচ্ছে করলে কাগজ দেখতে পারেন।

বিজয়নগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সালেহ বলেন, খালের বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ বে-আইনি। কিন্তু তাদেরকে বললে তারা কিছুই মানতে চাইনা। ডিসি স্যার ও ইউএন স্যার এর ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমেই এইটার সমাধান হবে বলে মনে হয়।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহাবুবুর রহমান বলেন, উন্মক্ত জলাশয়ে বাঁধ দিয়ে কেউ মাছ চাষ করতে পারবেনা এইটা বে-আইনি। আমি দুষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নিব।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাজমহল বেগম বলেন, উন্মক্ত স্থানে আড়াআড়াভাবে ও সেতুর নিচে নৌকা চলাচল বন্ধ করে কেউ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করতে পারেনা। আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রশাসনের সাথে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।






Shares