পুকুরের ঘাটলা ও সড়কের ইট আত্মসাতের অভিযোগ
সরকারি ইট দিয়ে মেম্বারের পাকা ভবন নির্মাণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:: ২০১৪ সালে সরকারি অর্থায়নে চান্দেরপাড়া গ্রামে মসজিদের জন্য পুকুরে একটি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়। আর সে ঘাটলার সকল ইট তুলে নিয়ে নিজের বাড়ির নতুন ভবন নির্মাণের কাজে লাগিয়েছেন ওই গ্রামের ইউপি সদস্য ইয়াছিন মিয়া। এমনই অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ গ্রামের চান্দেরপাড়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিনসহ অনেকের।
এ নিয়ে গত মাসের ২০ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন মো. আলাউদ্দিন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। পরে তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা এলজিইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দেন ইউএনও।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া গ্রামের কোনা বাড়ি জামে মসজিদের উত্তর পশ্চিম পাশে ২০১৪ সালে পুকুরে মুসল্লিদের ওযু করার সুবিধার্থে একটি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়। এর কিছুদিন পর চান্দেরপাড়া ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইয়াছিন মিয়া পুকুর ঘাটলার সকল ইট খুলে নিয়ে তার পাকা ভবনের কাজে ব্যবহার করে। এ নিয়ে স্থানীয়রা বাঁধা দিলে ইউপি সদস্য নতুন করে আরেকটি ঘাটলা তৈরি করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এর পর দুই বছর কেটে গেলেও পুকুরের ঘাটলা নির্মাণ করে দেয়নি ওই ইউপি সদস্য।
কোনা বাড়ি জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার মো. ফজলুল হক জানান, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইয়াছিন শুধুমাত্র মসজিদের ঘাটলার ইট চুরি করেনি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে মসজিদের পাশে একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য এলজিইডির দুইটি প্রজেক্টে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে ইট সলিংয়ের কাজ করে। রাস্তা নির্মাণের কিছুদিন পরই রাস্তার সকল ইট মেম্বার নিজের বাড়িতে নিয়ে পাকা ভবন তৈরি করছে। বাঁধা দিলে আমাদের মামলার হুমকি দেয়।
সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের উপজেলা এলজিইডির এডিপি প্রকল্প থেকে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে চান্দেরপাড়া কোনা বাড়ি জামে মসজিদের জন্য পুকুরে ওযু করার সুবিধার্থে একটি ঘাটলা তৈরি করা হয়। এর কয়েক বছর পর ভালো ঘাটলাটি ভেঙ্গে সকল ইট বাড়িতে নিয়ে যায় ইয়াছিন। পাকা ভবন নির্মাণ করতে পুকুরের ঘাটলার ইট ব্যবহার করেন তিনি। বর্তমানে পুকুরের ঘাটলার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইয়াছিন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি পুকুর ও রাস্তার ইট নিজের বাড়ির কাজে লাগাইনি।
অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইছহাক মিঞা বলেন, ঘটনাস্থলে ঘুরে বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে ইউএনও অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
ইউএনও নাজমা আশরাফী এ প্রতিবেদককে জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করার জন্য এলজিইডিকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।