Main Menu

ইউপি সদস্য ও সমাজপতিদের মদদে- সরাইলে বাউল মেলায় রাতভর জুয়া, অনুমতির মূল্য ৩০ হাজার টাক

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ , সরাইল –
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক বাউল মেলায় বিরামহীন ভাবে রাতভর চলেছে জুয়া। জুয়ারী ও খেলোয়াড়রা মদ পান করে ছিল মাতাল। সন্ধ্যার পর বাংলা মদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র মেলায়। নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ তখন অবস্থান করছিল মেলায়। জজ মিয়া সহ কিছু সমাজপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সাইয়িদ মিয়ার মধ্যস্থতায় মেলায় জুয়া চালানোর অনুমতি ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জুয়ারীরা। তাই একদিকে বাউল গান ও অন্য দিকে জুয়া চলছিল পাল্লা দিয়ে। বিভিন্ন স্পটে পাহাড়ায় ছিলেন ইউপি সদস্য ও সমাজপতিরা। উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ গ্রামের চিতাশালের পাশে খোলা মাঠে গত রোববার রাত ব্যাপি চলে এ মেলা। সরজমিনে অবস্থান করে স্থানীয় লোকজন ও জুয়ারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর ওই দিনে স্থানীয় বাউল শিল্পী দূর্গা চরনের উদ্যোগে বসে মেলা। এবার মেলা শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগ থেকেই মেলা ও শিল্পীদের টাকা যোগারের ধান্ধ্যায় নেমে পড়ে কমিটি। গ্রাম্য মাতাব্বর জজ মিয়া সহ কিছু সমাজপতি ও ইউপি সদস্য সাইয়িদ মিয়ার নেতৃত্বে জুয়ারীদের সাথে দফায় দফায় মিটিং হয়।  মেলায় রাতভর জুয়ার অনুমতি ৩০ হাজার টাকায় রফাদফা হয়। এ টাকায় প্রশাসন ক্রয় ও মেলার বিভিন্ন খরচ মিটানোর সিদ্ধান্ত হয়। দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেন নেতারা। তাই রোববার সন্ধ্যার পরই মেলার পাশের খালি জায়গায় মোমবাতি জ্বালিয়ে ১০/১২টি ঘর মেলে বসে পড়ে জুয়ারীরা। সরাইলের হারুন (৩৫), ধর্মতীর্থ গ্রামের মিরছিদ আলী (৪২), নোয়াগাঁও গ্রামের ছিনু মিয়া (৩০) ও সায়েদ মিয়া (৩৫) প্রমূখ জুয়ার আসরের নেতৃত্বে দেন। খেলায় কলেজ ও স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল বেশী। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে কিছুটা নগেচড়ে বসে জুয়ারীরা। জুয়ার ছবি ক্যামেরা বন্ধী করার পর পাগলের মত চারিদিকে ছুটাছুটি করতে থাকেন কিছু স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সমাজপতিরা। সাংবাদিকদের মেলা থেকে চলে যাওয়ার অনুরোধ বার্তা নিয়ে ঘাম জড়াতে থাকেন তারা। পুলিশের অবস্থান ছিল গাছাড়া। পুলিশের জনৈক কর্মকর্তা বলেন, মেলার বাউন্ডারীর বাহিরে জুয়া চললেও অল্প সংখ্যক ফোর্স নিয়ে বাঁধা দিতে নিষেধ করেছেন উর্দ্ধতন কর্তা ব্যক্তি। মেলার দায়িত্বে নিয়োজিত একাধিক কন্সটেবল বলেন, এমন গ্রাম্য মেলায় জুয়া খেলা হয়েই থাকে। ইউপি সদস্য মোঃ সাইয়িদ মিয়া ও মাতাব্বর জজ মিয়া জুয়ারীদের নিকট জুয়া খেলার অনুমতি বিক্রি করার কথা স্বীকার করে বলেন, এই টাকা নিয়ে শিল্পী থেকে শুরু করে আমরা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। তারা ঠিকমত খেলতে না পারলে সকালে দূর্গা চরনকে টাকা ফেরত দিতে হবে। নতুবা ঝামেলা হবে। আপনারা (সাংবাদিক) আমাদেরকে বলে জুয়ার ছবি উঠানো উচিত ছিল। মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী দূর্গা চরন জুয়ার অনুমতি বিক্রি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ১৪ বছর ধরে এভাবে মেলা করে আসছি। আমি গান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বাহিরে কি হয়েছে তা আমি দেখিনি। সেটা প্রশাসনের বিষয়। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলী আরশাদ বলেন, জুয়ার সাথে আমি কখনো আপোষ করি না। জুয়ারোধে আমি সেখানে সারারাত এ এস আই কবিরকে বসিয়ে রেখেছি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, একজন ইউপি সদস্য জুয়ারীদের সাথে অনুমতি বিক্রির রফাদফা করা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী। 






Shares