Main Menu

দারোগা ফরহাদ আব্বাস অবশেষে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন

+100%-

সরাইল  প্রতিনিধি: অবশেষে ঘুষের এক লাখ টাকা ফেরত দিলেন সরাইল থানার দারোগা ফরহাদ আব্বাস। বাকী ৫০ হাজার টাকা চলে গেছে বিভিন্ন জনের পেটে। দেড় লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে এক লাখ টাকা ফেরত পেয়ে অনেকটা সন্তুষ্ট বাদী পক্ষের লোক জন। স্বস্থ্যির ঢেকুর তুলছেন তারা। তবে পুলিশের কাছ থেকে এ টাকা ফেরত পেতে বাদীকে ঘুরতে হয়েছে এক মাস। সহ্য করতে হয়েছে অনেক হুমকি ও যন্ত্রনা। টাকা পেয়ে তারা গণ মাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, গত ১ জুলাই উপজেলা সদরের প্রাতঃবাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে প্রবাসী মাজু মিয়াকে প্রথম স্ত্রী ও তার তিন সন্তানসহ অন্যরা নৃশংসভাবে খুন করে। এ ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলী বেগম মামলা করলে পুলিশ মাজু মিয়ার প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ও ছেলে আকবর মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে ৭ জুলাই এ খুনের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাল্টা মামলা করে মাজু মিয়ার বড় মেয়ে শিল্পী আক্তার। এতে শিউলী বেগম ও তার স্বজনদের আসামি করা হয়। আদালত দু’টি মামলা একত্রে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা ফরহাদ আব্বাস। শিউলী বেগম ও তার পরিবারের লোকজন জানায়, প্রতিপক্ষের মামলার ফাইনাল দেয়ার কথা বলে দারোগা ফরহাদ তিন লাখ টাকা দাবী করেছিল। পরে তাকে তিন বারে দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়। পরের দিনই মামলাটি চলে যায় ডিবিতে। টাকা ফেরত পেতে থানায় ধরনা দিতে থাকে বাদীর লোকজন। বেঁকে বসেন দারোগা। শুরু হয় দর কষাকষি। ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় বাদী ও তার স্বজনদের দেয়া হয় গ্রেপ্তারের হুমকি। তিন মাস বয়সের শিশু বাচ্চাকে কুলে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যায় বাদী শিউলী বেগম। নিরুপায় হয়ে বিষয়টি তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়। গত ২৮ জুলাই দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় “ঘুষের টাকা ফেরত পেতে থানায় ধরনা” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। নড়েচড়ে বসেন পুলিশ প্রশাসন। দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন দারোগা ফরহাদ আব্বাস। সত্য প্রকাশ করায় চরম ক্ষুদ্ধ হন বাদী পক্ষের উপর। একটি কাগজ লিখে স্বাক্ষরের জন্য পাঠান বাদী শিউলী বেগমের নিকট। স্বাক্ষর না দেয়ায় বাদী ও তার স্বজনদের দেয়া হয় গ্রেপ্তার করার হুমকি। পুলিশের কিছু দালাল তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। গত ২ আগষ্ট দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় “ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় গ্রেপ্তারের হুমকি, বাদী এলাকাছাড়া” শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিরা। শুরুতে টাকা নেয়ার কথা সাফ অস্বিকার করলেও সংবাদ প্রকাশের পর টাকা ফেরত দিতে সম্মত হন দারোগা। দিনক্ষণ, স্থান ও মাধ্যম নিয়ে পড়েন বেকায়দায়। এ ভাবে চলে যায় আরো ১০/১২ দিন। অবশেষে পুলিশের এক প্রভাবশালী দালালের মধ্যস্থতায় গত বুধবার জনৈক আইনজীবির জেলা শহরের বাসায় বসে শিউলী বেগমের ভগ্নিপতি জামালের হাতে ফেরত দেয়া হয় ঘুষের এক লাখ টাকা। ওই দালাল ও এ মামলা থেকে পুলিশের কথা বলে বাগিয়ে নিয়েছে চার লক্ষাধিক টাকা। জানানো হয় বাকী ৫০ হাজার টাকা চলে গেছে বিভিন্ন জনের পেটে। বিষয়টি মেনে নেয় জামাল। জামাল মিয়া বলেন, শুধু পত্রিকায় রিপোর্ট হওয়ার কারনেই এক লাখ টাকা ফেরত পেয়েছি। আমরা সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞ। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঘুষ নেয়া ও ফেরত চাওয়ার বিষয়টি পত্রিকার রিপোর্ট পড়ে জেনেছি। ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বর্তমানে মাজু হত্যা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা আমি নিজে।






Shares