Main Menu

সরাইলে এক প্রবাসী খুন : পাল্টা প্লাটা : বাদী হলেন আসামি

+100%-
সরাইল  প্রতিনিধিঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মাজু মিয়া নামে এক প্রবাসী খুনের ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। এ হত্যাকা- নিয়ে পরিবারের লোকদের মধ্যে রশিটানাটানি চলছে। এতে জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, প্রবাসী খুনের ঘটনায় গত ১ জুলাই নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলী বেগম বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয় নিহত মাজু মিয়ার প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, তার ছেলে জাহাঙ্গীর ও আকবর মিয়া, মেয়ে লিপি আক্তার, প্রথম স্ত্রীর ভাই যাদব আলী ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে। এ মামলার আসামি আনোয়ারা বেগম ও আকবর মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা জেলহাজতে আছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। অপরদিকে একই খুনের ঘটনায় গত ৭ জুলাই নিহত মাজু মিয়ার মেয়ে শিল্পী আক্তার বাদী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয় নিহতের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া, দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলী বেগম, তার পিতা আব্দুল আলীম, নিহতের ভাই জামাল মিয়া, দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন ভাই আব্দুর রহমান, হাবিবুর রহমান, নাছির মিয়া এবং সিরাজুল ইসলাম ও আল আমিন নামে তাদের দুই আত্মীয়কে। বাদীর আইনজীবি জানান, এ মামলাটি আমলে নিয়ে থানায় আগে দায়ের করা মামলার সাথে একত্রে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শিউলী বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, তার স্বামীকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের নির্দেশে ছেলে জাহাঙ্গীর ও অন্যান্য আসামীরা মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। অপরদিকে শিল্পী আক্তার মামলায় উল্লেখ করেন, সম্পত্তি গ্রাস করতে শিউলী বেগমের নির্দেশে জাহাঙ্গীরসহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার পিতাকে হত্যা করা হয়। উল্লেখ্য, সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের মৃত তারু মিয়ার ছেলে সদ্য প্রবাস ফেরত মাজু মিয়া গত ১ জুলাই দুপুরে সদরের প্রাতঃবাজার এলাকায় তার প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে নির্মমভাবে খুন হন। এদিকে এ হত্যাকান্ড নিয়ে পাল্টা মামলার ঘটনায় নিহতের স্বজনরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাদের অনেকের দাবি, প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের হুকুমে তার তিন ছেলে মেয়ে এবং ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী মিলে প্রকাশ্যে মাজু মিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে খুন করে। খুনের দায়ে আনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে আকবর জেলে আছে।
প্রাতঃবাজার এলাকার অনেক ব্যবসায়ী জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে ছেলে জাহাঙ্গীর তার পিতা মাজু মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় তার প্রথম স্ত্রীসহ অন্য সন্তানেরা তার ওপর হামলা চালায়। তাদের হাত থেকে বাঁচতে রক্তাক্ত অবস্থায় মাজু মিয়া দৌড়ে বাজারের রাস্তায় নেমে আসেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ কথা বাজারের সকলেই জানেন। নিহতের আপন ভাই জামাল মিয়া বলেন, দ্বিতীয় বিয়েই কাল হয়ে দাঁড়ায় মাজু মিয়ার। এ বিয়ের পর তার প্রথম স্ত্রীসহ সন্তানেরা তার ওপর চরম ক্ষুব্ধ ছিল। দেড়মাস আগে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলীর গর্ভে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এ খবর পেয়ে কয়েকদিন আগে সৌদী আবর থেকে ছুঁটিতে দেশে আসেন মাজু মিয়া। চাচাত ভাই মোঃ আবদুল্লাহ জানান, প্রথম স্ত্রীর নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মাজু মিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধ্য হন। মাজু মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে খুন হন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলী আড়াই মাস যাবত পিতার বাড়ি বাঘাসূতা গ্রামে অবস্থান করছেন। সেখানে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। প্রায় দুইমাস বয়সী এ শিশু রাইসা মনি এখনেও বুঝতে পারেনি তার পিতা বেঁচে নেই।  
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী এ খুনের ঘটনায় দু’টি মামলার কথা নিশ্চিত করে বলেন, পরের মামলাটি আদালত থেকে এসেছে। আদালতের নির্দেশে দু’টি মামলায়ই নিভীড়ভাবে তদন্ত করছে পুলিশ। এ হত্যাকান্ডে দু’টি মামলার কারণ সম্পর্কে তিনি অন্য কোন মন্তব্য না করে বলেন আমরা (পুলিশ) আদালতের বাইরে যেতে পারে না।






Shares