মুঠোফোনে তার স্ত্রীকে তালাক -ফতোয়া
সরাইল(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি ফতোয়াই কাল হলো অন্তসত্বা এক গৃহবধুর। ভেঙ্গে গেছে স্বামীর সাজানো সংসার। এক নরপশু দ্বারা ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে থানায় হয়েছে মামলা। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বাদিনীকে। প্রান ভয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে অবস্থান করছে ওই গৃহবধু। উভয় পক্ষকে ফুসলিয়ে যাচ্ছে তারা। হত ভাগিনী গৃহবধুর বাড়ি উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বড়–ইছাড়া গ্রামে। স্বামী সেলিম মিয়ার বাড়ি ভৈরব। ধর্ষক মোকসেদ মিয়া গৃহবধুর নিকট আত্মীয়। ধর্ষনের যন্ত্রনা ও সংসার হারানোর বেদনায় এখন দিশেহারা গৃহবধু। এলাকাবাসী, গৃহবধুর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস পূর্বে বড়–ইছড়া গ্রামের ওই মেয়েটির সাথে বিয়ে হয় ভৈরবের মোটুপী গ্রামের জমসেদ মিয়ার ছেলে হেলিম মিয়ার। বিয়ের তিন মাস পর গৃহবধু বড়–ইছড়া তার খালার বাড়ির বিয়ের অনুষ্টানে বেড়াতে যায়। রাতে তার খালুর ভাইপো দুই সন্তানের জনক মোকসেদ যৌন নিপিড়ন করতে গিয়ে গৃহবধুকে আহত করে। উভয় পরিবারের মধ্যে চলতে থাকে মান অভিমান। এ ঘটনাটি জেনে গৃহবধুর স্বামী হেলিম রাগের মাথায় মুঠোফোনে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। পরে হেলিম মিয়া গত ৯ জানুয়ারী এ বিষয়ে ফতোয়ার জন্য ভৈরব কমলপুরের জামিয়া ইসলামীয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগের শিক্ষক মুফতী মোঃ শাহাদাত হোসাইনের কাছে যান। লিখিত বক্তব্য পাওয়ার পর মুফতী সাদা কাগজে লিখিত সিদ্ধান্ত দেন যে, তাহার স্ত্রীর উপর তিন তালাক মুগাল্লাজা পতিত হইয়া তাহাদের বৈবাহিক সম্পর্ক একেবারে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছে। তাহারা আর সংসার করিতে পারিবে না। ফতোয়ার কাগজটি সে তার স্ত্রীর নিকট পাঠায়। । গৃহবধু নিজে বাদী হয়ে মোকসেদ সহ তিনজনকে আসামী করে সরাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা তুলে নিতে বাদিনী ও তার পরিবারকে চাপ দিচ্ছে। প্রান ভয়ে সে নিজের গ্রাম ছেড়ে পাশের গ্রাম হরিপুরে অবস্থান করছে। গৃহবধুর স্বজনদের আসামী করে একটি সাজানো ডাকাতি মামলা দায়ের করেছে ধর্ষকের স্বজনরা। মোকসেদের বড় ভাই মোমেন (৩৫) ও চাচা নূর আলী (৪০) বলেন, শয়তানী করতে গিয়ে মোকসেদ গৃহবধুকে আহত করেছে। আমরা চিকিৎসা করেছি। ভৈরব গিয়ে গৃহবধুর স্বামীর নিকট ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু ফতোয়া পেয়ে সে গৃহবধুকে তালাক দিয়েছে। ধর্ষন মামলার কাউন্টার হিসেবে ডাকাতি মামলা করেছি। অন্যসব অভিযোগ মিথ্যা। গ্রাম্য মাতাব্বর ও শিক্ষক আজগর আলী বলেন, ফতোয়াই কাল হয়েছে গৃহবধুর জন্য। ফতোয়ার কারনেই এখানে দেন দরবার সৃষ্টি হয়েছে। গৃহবধু আহত হওয়ার ঘটনা সত্য। বাকী সব মিথ্যা। মুফতী মোঃ শাহাদাত হোসাইন হেলিমকে ফতোয়া দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি সরকার নিযুক্ত মুফতী নয়। প্রয়োজনে মাদ্রাসায় লোকজন আসে। অফিসের মাধ্যমে দুইশত টাকা ফি নিয়ে আমি ফতোয়া দেয়। গৃহবধুর স্বামী হেলিম মিয়া বলেন, মোকসেদ নামক যুবকের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে গিয়ে আহত হওয়ার খবর শুনে রাগ করে স্ত্রীকে ফোনে তালাক বলেছি। পরে হুজুরের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন স্থায়ীভাবে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। আমি আর তাকে (গৃহবধু) নিয়ে সংসার করব না। |
« ছাত্র-যুবদলের উপর ছাত্রলীগের হামলা,পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদে নিন্দা, নিঃশর্ত মুক্তি ও সুস্থতা কামনা (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) দ্বিতীয় দিনের হরতালে উত্তপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া »