মো : মাসুদ : সরাইল ৫০ শয্যার হাসপাতালটি এখন দালাল, এমআর ও পকেটমারদের দখলে। তারাই এখন দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে গোটা হাসপাতাল। বিভিন্ন কিনিকের মালিকদের সাথে রয়েছে তাদের যোগসাজশ। হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তারকে ম্যানেজ করেই চলছে তাদের প্রতিদিনের আয় রোজগার। অপরদিকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার শত শত নিঃস্ব অসহায় নারী, পুরুষ ও শিশুরা। অনেক সময় দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েও রেহাই পাচ্ছেন না রোগীরা। প্রায়ই হাসপাতাল চত্বরে ঘটছে পকেটমারের মত জঘন্য ঘটনা। দিনে ও রাতে নিয়মিত চলছে মাদকসেবীদের আড্ডা। সকাল ১১টার পর ডাক্তারদের সামনে রোগীর চেয়ে এমআরদের উপস্থিতি থাকে বেশি। অভিযোগ রয়েছে, কর্তব্যরত ক’জন ডাক্তার এবং কর্মচারী পাশের প্রাইভেট হাসপাতাল ও কিনিকে রোগী পাঠানো কাজে দালাল চক্রকে নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তাদের খপ্পরে পড়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন নিত্যদিন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশকয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও কিনিক। যার অধিকাংশের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। এসব প্রতিষ্ঠান মানুষের স্বাস্থ্য সেবার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা-পয়সা। এগুলোর মধ্যে বেশকয়েকটি প্যাথলজিতে পরীক্ষার নামে চলে নারী ও মাদকের ব্যবসা। এসকল বিষয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় একাধিবার আলোচনা হলেও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ নীরব। সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক মোহাম্মদ আলী খোকন। তার বাড়ি হাসপাতালের একদম নিকটে। এ হাসপাতালে তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত কাজ করছেন। বাণিজ্যিক দৃষ্টি ভঙ্গির কয়েকজন ডাক্তারের দয়ার বদৌলতে তিনি বদলি হচ্ছেন না। দায়িত্বে অবহেলার শতাধিক অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে দিন পার করছেন। তিনি বাড়িতেই ‘ইনসাফ মেডিকেল সেন্টার’ নামে একটি কিনিক খুলে বাণিজ্য করছেন। যার নেই বৈধ কোন কাগজপত্র। তিনি নিজেই করছেন প্যাথলজিষ্ট ও টেনিশিয়ানের স্বাক্ষর। সরাইল হাসপাতালে ডাক্তার অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়মিত। গতকাল বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে পাঁচজন অনুপস্থিত। সকাল থেকে অপেক্ষা করছে শতাধিক রোগী। চেম্বার খুলা থাকলেও হাসপাতালে উপস্থিত নেই শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জসিম উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডা. নাছির উদ্দিন, ডা. কানিছ ফাতেমা, ডা. মাহবুবুল আলম ও ডা. সিফাতই মাহবুব। এছাড়া মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আহসানুল হক কাউছার রয়েছেন ছুটিতে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ জহিরুল হক বলেন, ডাক্তারদের অনুপস্থিতি সম্পর্কে মন্ত্রণালয় পত্র মারফত প্রতিবেদন চেয়েছেন। অনুপস্থিত পাঁচ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করব। দালালসহ হাসপাতালের সকল অনিয়ম সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। |