Main Menu

সরাইলে শ্রমিকদের উপর মালিকের নির্যাতন – জোর পূর্বক খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদ

+100%-
সরাইল প্রতিনিধি ॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বিশ্বরোড মোড় সংলগ্ন খাটিহাতা নামক স্থানে এক এ্যালুমোনিয়ামের সামগ্রী তৈরীর কারখানার শ্রমিকদের উপর মালিক হাবিবুর রহমান কর্তৃক বহিরাগত কিছুলোকের সহায়তায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতন শেষে নিজেকে রক্ষার জন্য তিনি ভয় ভীতি দেখিয়ে সারা দিন অনাহারে রেখে জোর পূর্বক ১৬ শ্রমিকের কাছ থেকে দেড়শত টাকা মূল্যের খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায় করেছেন। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে মেসার্স মায়া মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজে গত বুধবার দুপুরে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় কারখানায় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে শ্রমিকরা। জোর পূর্বক খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায়ের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন হাবিবুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্যাতিত শ্রমিকরা জানায়, অন্যান্য দিনের মত গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে শ্রমিকরা কাজ শুরু করে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা কাজ শেষ করে ফেলে। অতিরিক্ত সময়ে কাজ করার জন্য মালিক তাদের চাপ দেয়। নিয়ম মাফিক শ্রমিকরা ওভার টাইম দাবী করলে বেঁকে বসেন মালিক। কারখানার নিয়মানুযায়ী সুযোগ দিতে সম্মত না হওয়ায় শ্রমিকরা কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করে। উত্তেজিত হয়ে মালিক বহিরাগত কিছু লোকের সহায়তায়  শ্রমিকদের কারখানার ভেতর অবরুদ্ধ করে ফেলেন। ভেতর থেকে শ্রমিকরা চিৎকার করতে থাকে। কেউ তাদের উদ্ধার করতে আসতে পারেননি। দেড়শত টাকা মূল্যের খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে অবরুদ্ধ শ্রমিকদের চাপ দেয় মালিক। রাজি না হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে দিন ব্যাপী উপোষ রাখা হয়। প্রান ভয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ ১৬ জন শ্রমিক বাধ্য হয়ে খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে। পরে তাদেরকে মুক্ত করে দেয়া হয়। অবরুদ্ধ অবস্থায় জীবন রক্ষার্থে স্বাক্ষর প্রদানকারী শ্রমিকরা হচ্ছে- নেত্রকোনা জেলার মোঃ জয়নাল আবেদীন (২৭), আলমগীর (২২), জাকির (২০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবিনগরের সামছু আলম (২৩), সদর উপজেলার হিরন (৩৫), সরাইলের কিশোর শ্রমিক সাইফুল (১৭), বগুড়ার রাজ্জাক (২২), মাদারীপুরের হারুন (৩৫), ও হবিগঞ্জের আজিজ (২২)। শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কাজটা অত্যন্ত কষ্টের। টাকা পায় সামান্য। সংসার চলে না। প্রাপ্য ওভার টাইম না দেয়ায় আমরা কাজ করিনি। তাই আমাদের উপর চালানো হয় নির্যাতন। একটি কক্ষের ভিতর ঢুকিয়ে বাহিরে তালা দেয়া হয়। সন্ধা পর্যন্ত কোন খাবার দেয়া হয়নি। খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেয়ার পর মালিকের কড়াল গ্রাস থেকে মুক্তি পায়। স্বাক্ষর দেয়ার পর মালিক বলেন তোদেরকে জালে বন্ধী করলাম। ষ্ট্যাম্পে ইচ্ছেমত টাকার অঙ্ক লিখব। নড়াচড়া করলে কারখানা ভাংচুরের অভিযোগ এনে তোদের বিরূদ্ধে মামলা করব। কারখানার মালিক হাবিবুর রহমান মন্নর আলী ও কালাম নামের বহিরাগত কিছু লোকের সহায়তায় জোর পূর্বক খালি ষ্ট্যাম্পে শ্রমিকদের স্বাক্ষর আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, অগ্রিম টাকার স্বাক্ষর নিয়েছি। তাদেরকে নিয়োগ পত্র দেয়নি। শ্রমিকদের নাম ঠিকানা ও আমার কাছে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনীত অন্যান্য অভিযোগ মিথ্যা।  






Shares