Main Menu

সরাইল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে স্বামীর সংসারে ফিরিয়ে দিতে নেতাদের ব্যর্থ চেষ্টা

+100%-

সরাইল প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীনকে তার স্বামীর সংসারে ফিরিয়ে দিতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের সকল চেষ্টা অবশেষে ব্যর্থ হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে বিষয়টি নিয়ে এক সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে সালিশ সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব:) জহিরুল ইসলাম খাঁন (বীর প্রতীক), জেলা আ’লীগ সভানেত্রী মিনারা আলম, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী রফিক উদ্দিন ঠাকুর, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বাশার, আশুগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়াছমিন বেগম, সরাইল আ’লীগ নেতা এ আই মনোয়ার উদ্দিন মদন, মো. সাদেক মিয়া, ইদ্রিছ আলী, হাজী মাহফুজ আলী, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, মিজানুর রহমান প্রমূখ।
সালিশ সভায় নেতারা আবারও পাঁচ সন্তানের দিকে চেয়ে ও তাদের ভবিষতের চিন্তা করে স্বামী আবুল মিয়ার সংসারে ফিরে যেতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগমকে পরামর্শ দেন। এসময় ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীন সালিশ সভাকে জানান, দেশে স্বামী কতর্ৃৃক নির্যাতিতা নারীদের মধ্যে আমি একজন। বহু নির্যাতন সহ্য করেছি। সন্তানদের দিকে চেয়ে বারবার চেষ্টা তদবির করেও তার অত্যাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। সর্বশেষ সে গর্ভাবস্তায় আমাকে পিতার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। তার জন্য আমি দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছি। উল্টো সে আমার চরিত্রের ওপর আঘাত করেছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট নানা অপবাদ ছড়িয়েছে। তাই আমি গত ২৮-৮-২০১০ইং তারিখে আবুল মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে তালাক প্রদান করেছি।
এদিকে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ভাইস চেয়ারম্যানের দায়ের করা যৌন হয়রানি মামলা প্রসঙ্গে মাহমুদা পারভীন বলেন, বিষয়টি উপজেলা আ’লীগ নেতা হাজী আবদুল হালিম নিস্পত্তি করেছিলেন। পরে জাকির উত্তেজনা দেখানোর কারণে আমি রাগের মাথায় মামলাটি রেকর্ড করিয়েছি। এ জন্য আমি দুঃখিত।
এ প্রসঙ্গে আ’লীগ নেতা মেজর (অবঃ) জহিরুল ইসলাম খান বলেন, মূলত সালিশ সভার আয়োজন ছিল ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীন ও জাকিরের বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য। সেখানে আবুল ইসলাম তার স্ত্রীকে সংসারে ফিরিয়ে নিতে সভায় সকলের কাছে অনুরোধ করেন। আমরা চেয়ে ছিলাম তার সংসারে সে ফিরে যাক। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বিষয়টি তাদের পারিবারিক সমস্যা। আ’লীগ নেত্রী মিনারা আলম বলেন, কোন নারী যেন স্বামীর সাথে এমন আচরণ না করে এ কামনা করি। জাকিরের মামলাটি মিথ্যা-ভিত্তিহীন। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি। ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ বাশার বলেন, পাঁচ সন্তানের দিকে চেয়ে তিনি স্বামীর ঘরে ফিরে যাবেন এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়াছমিন বেগম বলেন, মাহমুদা পারভীন স্বামী ও সংসারের প্রতি অন্যায় করেছে। সরাইলবাসীর প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে। জাকিরের বিরুদ্ধে মামলা করা ঠিক হয়নি। উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, মাহমুদাকে সংসারে ফিরিয়ে দিতে একাধিকবার সালিশ-বৈঠক করেছি। কিন্তু সে কারও কথা রাখেনি। সে অন্যায়ভাবে জাকিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, জাকির দোষী হলে তার বিচার হউক। কিন্তু ঘটনা মিথ্যা প্রমাণিত হলে তারও বিচার হতে হবে। মো. আবুল ইসলাম বলেন, মাহমুদা সংসারে ফিরিয়ে নিতে অনেক চেষ্টা করেছি। যেহেতু সে আমার সংসারে ফিরে যাবে না, সেহেতু আমার সম্পদগুলো সে ফিরিয়ে দেয়া উচিত।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করলে ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীন বলেন, ক্ষমতার দাপট ও শক্তির বিনিময়ে সবকিছু সম্ভব তার প্রমাণ সোমবারের সালিশ সভা। জাকির অফিস কক্ষে প্রকাশ্যে আমাকে ইভটিজিং সহ লাঞ্ছিত করেছে। মামলা করার পর বিষয়টি নিস্পত্তির করতে আ’লীগ নেতারা সালিশে বসেন। উপজেলা চেয়ারম্যান তার ভাতিজি জামাই জাকিরকে রক্ষা করতে ও আমাকে জনতার সামনে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে ওই সালিশে আবুল ইসলামকে পুঁজি করে আমার ব্যক্তিগত পারিবারিক বিষয় টেনে এনেছেন। ভাইস চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, যারা বিভিন্ন সময়ে ইন্দন দিয়ে আমার সংসার ভেঙ্গেছে আজ তারাই আমার অসহায়েত্বের সুযোগ নিয়ে উপহাস করছেন। আমি পাঁচ সন্তান নিয়ে আছি। বিচারের ভার আল্লাহ’র কাছে ছেড়ে দিয়েছি






Shares