Main Menu

‘ আমি দিতে এসেছিলাম, নিতে নয় ’

সরাইলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বিদায়

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে: সরাইলের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বসেছিল আবেগ উচ্ছাসের এক মিলন মেলা। উদ্যেশ্য সাবেক প্রধান শিক্ষক মোহিত কুমার দেব ও ১১১ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বিদায় সংবর্ধনা। সেই সাথে মিলাদ ও দোয়ার মাহফিল। প্রিয় শিক্ষকের প্রতি ভালবাসার টানে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল শিক্ষক শিক্ষার্থী।
গত সোমবার সকাল থেকেই বিদ্যালয়ের মাঠে ছিল সাজসাজ রব। বেলা বাড়ার সাথে বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। আজ (সোমবার) মোহিত স্যারের বিদায় সংবর্ধনা! কিন্তু তিন বছর পরে কেন? এটা তো আগেও হতে পারত। এমন সব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে শিক্ষার্থীদের মুখে। উত্তর এক সময় বেরিয়ে আসে অতিথিদের বক্তব্যে। শিক্ষক শেখ মো. ইউনুছুল হকের সঞ্চালনায়, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মানবজমিনের যুগ্মসম্পাদক শামীমুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন। শিক্ষক আমিনুল ইসলামের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সভার সূচনা হয়। বক্তব্য রাখেন-সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান বাবুল, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. আনোয়ার মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা অক্ষয় কুমার চক্রবর্তী,অভিভাবক প্রতিনিধি মো. আরিফুর রহমান, সাবেক সদস্য মাওলানা মো. রাকিব মিয়া, সমাজসেবক মো. রুহুল আমিন ও পল্লী চিকিৎসক মো. ছারুয়ার চৌধুরী প্রমূখ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আক্ষেপ ও দু:খে ভারি হয়ে ওঠে সভার পরিবেশ। তিনি বলেন, আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। মোহিত কুমার দেবের বক্তব্যে ছিল ১৪ বছর দায়িত্ব পালনকালের নানা অজানা বিষয়। তার ভাষায় যোগদানের পরই বুঝলাম আলোর ভিতরে রয়েছে অন্ধকার। বাবার আদর্শে ধৈর্য্য ধরেই শিক্ষকতা করেছি। তিনি (বাবা) বলতেন জীবনে একটি ছেলে/মেয়েকে ও যদি মানুষ করতে পার সেটাই বড় সফলতা। সেই লক্ষ্যেই সততার সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। আমি দিতে এসেছিলাম, নিতে নয়। কিন্তু চাকরির জীবনের শেষদিন টিফিনের একটি বিষয়কে কেন্দ্র যা হয়েছে তা ইতিহাস। এটা ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। সত্য কোন দিন চাপা থাকে না। আমার বিশ্বাস ছিল ইশ্বর রক্ষা করবেন। করেছেনও তাই। আজ যারা আমাকে সম্মান দিচ্ছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু বাকী নেই। চোখের জল ছেড়ে প্রিয় শিক্ষার্থীদের উদ্যেশ্যে বলেন, ভাল কাজ কখনো বৃথা যায় না। তোমাদের দিকে চেয়ে আছে আগামী ভবিষ্যৎ। তোমরাই জ্বালাবে শিক্ষার আলো। আমাকে দেখতে এসেছ। কি বলি দেখতে শুনতে এসেছ। মনে রাখবে বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত লোকের। কারন এরাই পারে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে।

বিদ্যালয়ে জমি দাতা প্রয়াত ইউনুছ মিয়া ও হারুন মিয়ার উত্তরসূরিদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। সবশেষে কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ক্রেষ্ট ও বৃত্তি প্রদান করে মিতালী সমাজ কল্যাণ সমিতি।






Shares