Main Menu

সরাইলে শিক্ষকের কান্ড! হাত ভেঙ্গে দিলেন শিশু শিক্ষার্থীর

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ সরাইলে সহকারি শিক্ষক মনিজুর রহমানের বিরুদ্ধে শ্রেণি কক্ষে মো. ইনজামুল হক চৌধুরী জয় নামের এক শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীকে শাররীকভাবে নির্যাতনের আইনগত বিচার চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীর পিতা মো. সারোয়ার আহমেদ চৌধুরী। দায় স্বীকার করে ইউএনও’র কাছে মুছলেকাও দিয়েছেন ওই শিক্ষক। বর্তমানে যন্ত্রণায় ছপফট করছে শিশু শিক্ষার্থী। শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছেন শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা।
আহত শিক্ষার্থী, অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইনজামুল হক দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। গত সোমবার টিফিনের পর ৬ষ্ট শ্রেণির ক শাখায় পাঠদানের জন্য যান সহকারি শিক্ষক মনিজুর রহমান। একই শ্রেণির ইনজামুল হক, সুজন মিয়া ও মাসুদ মিয়া খেলার ছলে একে অপরের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মনিজুর রহমান ওই ৩ ছাত্রকে পিটাতে থাকেন। ইনজামুল হকের বাম হাতকে চাপ দিয়ে ধরে কনুইয়ে ডাষ্টার দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর আহত করেন। ইনজামুল বাড়িতে গিয়ে বিছানায় পড়ে যায়।
আর ব্যাথায় চিৎকার করতে থাকে। হঠাৎ বিছানায় পড়ে যাওয়ার কারন জানতে চাইলে ইনজামুল শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক কর্তৃক আঘাতের বর্ণনা দেয়। মঙ্গলবার সকালে হাতটি ফুলে যায়। ইনজামুলের অবস্থা খারাপ দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে শিক্ষক মনিজুর রহমানের এহেন কর্মকান্ডের বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেন ছাত্রের পিতা সারোয়ার আহমেদ।
নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষক মো. বিলাত খাঁ ও মনিজুর রহমানকে উনার দফতরে ডেকে আনেন। মনিজুর প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন। পরে মুছলেকা দিয়ে যান শিক্ষক মনিজুর রহমান। গতকাল বুধবার আহত ওই শিক্ষার্থী আবারও ব্যাথায় অস্থির হয়ে পড়ে। পরে সরাইল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে এক্সরে করতে বলেন চিকিৎসক। এক্সরের রিপোর্টে দেখে যায় শিশু শিক্ষার্থীর হাতের কনুই ভেঙ্গে গেছে। তাকে দ্রুত জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। জেলা সদর হাসাপাতালের চিকিৎসক ভেঙ্গে যাওয়া হাতটিতে প্লাষ্টার করে দেন।
আহত শিক্ষার্থী ইনজামুল হক বলে, মনির স্যার আমার হাতে চাপ দিয়ে ধরে ডাষ্টার দিয়ে কনুইয়ের মধ্যে জুরে ৫-৬টি বারি মারেন। আমি চিৎকার করি। তিনি হাসেন। উনার মাইরের ভয়ে উপরের ক্লাশের অনেক ছাত্র বাপ ডাকে। শিক্ষার্থীর বাবা সারোয়ার আহমেদ বলেন, আমার ছেলেটা ২-৩ মাস পড়তে পারবে না। স্কুলে যেতে পারবে না। এ ক্ষতির দায়িত্ব কে নিবে? ওই শিক্ষক আবার আমার বাড়িতে গিয়ে টাকা দিয়ে নিস্পত্তির প্রস্তাব দেয়। সে আসলেই বাজে মানুষ। এ বিদ্যালয়ে ছাত্র থাকবে না। সারা গ্রামে তার এমন আচরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। আমি শিক্ষক মনিজুরের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মনিজুর রহমানের মুঠোফোনে (০১৭৪১-১৮০৪৯২) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে প্রধান শিক্ষক মো. বিলাত খাঁ বলেন, অভিযোগের দায় স্বীকার মনিজুর রহমান ইউএনও স্যারের কাছে মুছলেকা দিয়ে আসছেন। আমি এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তবে ব্যবস্থা নিব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ইসরাত বলেন, এ ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত। ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমি সবকিছুই করব।






Shares