Main Menu

‘আমি একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা’ সাংবাদিক সম্মেলনে ঠাকুর মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ আমি একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা নম্বর-০১১২০০০৬৮১০। আমি তাহের উদ্দিন ঠাকুরের চাচাত ভাই না। ১৯৬৯ সালের গণ অভূত্থানে সরাসরি অংশ করি। আল্লাহর রহমতে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আ’লীগের পক্ষে মাঠে কাজ করেছি। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেছি। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে বিদ্রোহ করে চতুর্থ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন গাফ্ফারের নেতৃত্বে ২০০ সেনা সদস্য সরাইল সদরের কাচারি মাঠে আসেন। তারা আজবপুর যাওয়ার জন্য ৬-৮ জন লোক চান। আমি, বেতারে কর্মরত কুট্রাপাড়ার আঞ্জু ভাই, নুরূল ইসলাম, থানা আ’লীগের প্রথম সভাপতি গোলাম রাব্বানী খান, তার ছেলে মজিদ খান, বণিক পাড়ার অমরেশ রায়, রসুলপুরের সিদ্দিকুর রহমান তাদের সাথে যায়। তিনদিন পর রাতে সরাইল হয়ে সিলেটের তেলিয়াপাড়া চা বাগানে পৌঁছি। রাতে চা বাগানে অবস্থান করে ভারতের আগরতলায় যায়। সরাইল থেকে আমিসহ ৬ জনের এই দলটি প্রথম মুক্তিযুদ্ধে গমনকারী। আমরা আখাউড়া ও কসবা সেক্টরে পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে সরাসরি মুখোমুখি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করি। বয়স কম। সামরিক প্রশিক্ষণও ছিল না। ক্যাপ্টেন গাফ্ফার আমাকে ডেকে বললেন, তোমার প্রশিক্ষণ দরকার। প্রশিক্ষণ শিবিরে চলে যাও। হাপানিয়া তিতাস ক্যাম্পে আব্দুল হালিম ভাইয়ের এখানে ওঠি। ১৫/২০ দিন পর ভারতের গৌকুলনগর ট্রেনিং সেন্টারের মেঘনায় যোগদান করি। স্বাধীনতার পর শিক্ষা জীবনে ফিরে আসি। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ফিরেও তাকায়নি। লাল বার্তায়ও নাম লিপিবদ্ধ করিনি। ২০১৬ সালে ভারতীয় পদ্মা-মেঘনা তালিকা প্রকাশ হওয়ার এক বছর পর জানতে পারি ওই তালিকায় আমার নাম রয়েছে। তালিকায় মেঘনা ক্রমিক নম্বর-৫৫৯। আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে গঠিত যাচাই-বাছাই-এ অংশ গ্রহন করে নির্বাচিত হয়। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই ‘সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা’ হিসাবে সরকারের অনুমোদন আসে। পরিপত্র জারি হলে ২০১৯ সালে ভাতার আবেদন করি। ওই বছরের ১৮ জুলাই থেকে আমি ভাতা পেতে শুরূ করি। দু:খজনক হলেও সত্য গত ২৬ ডিসেম্বর সরাইলের একটি মতবিনিময় সভায় কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা আমাকে ভূয়া ও অমুক্তিযোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমি এমন মিথ্যা বানোয়াট উদ্ভট, ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাকে সেখানে বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলায় আদালতের রায়ে খালাস প্রাপ্ত তাহের উদ্দিন ঠাকুরের চাচাত ভাই উল্লেখ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছেন। আমি উনার চাচাত ভাই না। রক্ত সম্পর্কের কোন আত্মীয়ও না। একই গ্রামের বাসিন্ধা মাত্র। এই গ্রামে আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।

গতকাল শনিবার দুপুরে নিজ বাসভবনে সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেন সরাইল বড় দেওয়ান পাড়ার বাসিন্ধা ঠাকুর মফিজ উদ্দিন আহমদের ছেলে ঠাকুর মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি লিখিত বক্তব্যের সাথে তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনীর অধিনায়ক মুহাম্মদ আতাউল গনী ওসমানী স্বাক্ষরিত সনদের ফটোকপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিস্তারিত তথ্যের ফটোকপিসহ অনেক প্রমাণপত্রও সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সরাইলে ৭৭ জন মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে কর্তৃপক্ষ নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পত্র প্রেরণ করেছেন। সেখানে আমার নাম নেই। পত্রে বলা আছে ভারতীয় তালিকাভূক্ত যারা তাদের কোন যাচাই-বাছাই নেই। আমি ভারতীয় তালিকাভূক্ত। তাহলে আমি অমুক্তিযোদ্ধা হলাম কিভাবে? শুনেছি মহিলা এমপি বর্তমান যাচাই-বাছাই পক্রিয়ায় উনার প্রতিনিধি হিসাবে আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। এই ক্ষোভে স্থানীয় কিছু মুক্তিযোদ্ধা আমাকে ছোট করার জন্য এমনটি করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।






Shares