হতাশ রুমিন ফারহানার অনুসারীরা




আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয়নগর একাংশ) আসনে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এতে হতাশ হয়েছেন এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী রুমিন ফারহানার অনুসারী নেতা-কর্মীরা।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। আসনটি জোটের শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে রুমিন ফারহানা ছাড়া অন্য কাউকে এখানে মনোনয়ন দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁর অনুসারীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে মাঠে আছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা। প্রায় প্রতি সপ্তাহে তিনি এলাকায় গণসংযোগসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আসছেন। আসনটিতে প্রায় প্রতিবারই ধানের শীষের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তবে ২০০৮ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী আওয়ামী লীগের শরিক দল জাতীয় পার্টির জিয়াউল হক মৃধার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানার ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। এখানে জোটের শরিক কাউকে (মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবী) মনোনয়ন দেওয়ার পর রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে জোটের প্রার্থী জামানত হারাবেন। যেমনটি হয়েছিল নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। এখানে ৭০ শতাংশ দলীয় নেতা-কর্মী রুমিন ফারহানার পক্ষে থাকবেন।
জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের জনগণের সঙ্গে ছিলেন, এখনো আছেন। ২০১৭ সাল থেকে এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন। ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া দলের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরুদ্ধে তিনি এলাকায় সমাবেশ করেছেন। এ জন্য তিনি অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন। বিষয়টি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানেন। এ ব্যাপারে তিনিই ভালো সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, ‘এখানে আমার নাম ঘোষণা না হওয়ায় শত শত অনুসারী কান্নাকাটি করছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে এখনো ভাবিনি। এ ব্যাপারে পরে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রুমিন ফারহানার এক অনুসারী বলেন, ‘এখানে তাঁকে (রুমিন ফারহানা) ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমরা প্রথমে আন্দোলন করব। প্রয়োজন হলে অন্য চিন্তা করব।’
১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-২ আসন (বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) থেকে রুমিন ফাহানার বাবা ভাষাসংগ্রামী অলি আহাদ নির্বাচন করেছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের তাহের উদ্দিন ঠাকুর। ‘বিতর্কিত’ ওই নির্বাচনে তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে ঢাকা থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯২ হাজার ৮৩৭।































