Main Menu

রোববার থেকে ৬০ ঘণ্টার টানা হরতাল বহাল থাকবেঃ বিএনপি।দুঃখ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

+100%-
ডেস্ক ২৪: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোনে অনুরোধ করা সত্ত্বেও কাল থেকে টানা তিনদিনের হরতাল প্রত্যাহার করতে রাজি হননি বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল সংবাদ সম্মেলন করে এই কথা জানিয়েছেন।

দুই নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের পর এক বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার বিষয়ে জানান মারুফ কামাল। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বারবার হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই অনুরোধ অনেক দেরিতে এসেছে। হরতাল ডাকা হয়েছে ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশ থেকে। কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে জোটের নেতা-কর্মীদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, এমন দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান অবস্থায় তাদেরকে ডেকে নিয়ে হরতাল প্রত্যাহার বিষয়ে তাদের মত নেয়া সম্ভব না।

শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ থেকে সংলাপ শুরুর দাবিতে রবিবার থেকে টানা তিন দিনের হরতাল ডেকেছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রী বারবার এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সোমবার গণভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান।

মারুফ কামাল খান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের পর খালেদা জিয়া বলেছেন, সোমবার তার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। তিনদিনের হরতাল শেষে প্রধানমন্ত্রী যেদিন বলবেন, সেদিন তিনি গণভবনে যেতে রাজি আছেন। তবে এর আগে নির্দলীয় সরকারের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নিতে হবে সরকারকে। তাহলেই কেবল সব ধরনের কর্মসূচি স্থগিত হবে। এর আগে কোনো ধরনের কর্মসূচি স্থগিত হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে মারুফ কামাল খান বলেন, টেলিফোনের মাধ্যমে আলাপের শুভ সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধা হবে। আলোচনার পথ থেকে সরকার সরে যাবেন না, এটা বিরোধীদলীয় নেতা প্রত্যাশা করেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মারুফ কামাল খান জানান, দুই নেত্রী সব মিলিয়ে ৪০ মিনিট কথা বলেছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী অতীতের নানা কথা বলেছেন। জবাবে বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, তারা অতীত নিয়ে কথা বলতে চান না। তারা চান নতুন ধরনের সরকার গঠন করতে। অতীতেও তারা একসঙ্গে কথা বলেছেন, বসেছেন, আগামীতেও তিনি আশা একসঙ্গে কাজ করার আশা করেন।

সন্ধ্যার আগে দুপুরেও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার টেলিফোনে কল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি সন্ধ্যায় তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে মনে করিয়ে দিলে তিনি সরকার প্রধানকে বলেন, তাঁর লাল টেলিফোন দীর্ঘদিন ধরেই নষ্ট। কাজেই এই টেলিফোনে কল না করে অন্য কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করা যেতো।

একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লাল টেলিফোন অচল থাকার খবর অসত্য। এই টেলিফোন সচল আছে। এই বক্তব্য দেয়ায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকার ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়, তা তিনি দেখতে চান।

হরতাল প্রত্যাহার না করায় দুঃখ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী –
ফোনে অনুরোধ করার পরও হরতাল কর্মসূচি তুলে না নেয়ার সিদ্ধান্তে দুঃখ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে হরতাল প্রত্যাহার করে ২৮ অক্টোবর বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সংলাপে বসবেন বলেও আশা করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা যেহেতু তাদের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছি, তাহলে কেন তারা হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপে আসবেন না?’ হরতাল প্রত্যাহার না করে বিরোধী দলীয় নেতা স্ববিরোধী অবস্থান নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে বিরোধী দলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফোন করে সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে আলোচনা ও নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে হরতাল প্রত্যাহারেরও আহবান জানিয়েছেন তিনি। গণভবনে বসে শেখ হাসিনা গুলশানের বাসায় অবস্থানরত খালেদা জিয়াকে ফোন দিলে দুই নেত্রীর মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ৩৭ মিনিটের ফোনালাপ হয়।






Shares