টর্নেডোর ছোবলে নিহতের সংখ্যা ২৬,পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়,বিশুদ্ধ পানি-বিদ্যুৎ তীব্র সঙ্কট
মনিরুজ্জামান পলাশ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া টর্ণেডো বিধ্বস্ত এলাকায় খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। টর্নেডোর ছোবলে সোমবার পর্যন্ত ২৬জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রান তৎপরতা চালালেও সমন্বয়ের অভাবে ক্ষতিগ্রস্থরা প্রয়োজনীয় ত্রান সামগ্রী পাচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী বিতরনের দাবী করলেও এখন পর্যন্ত বেশীর ভাগ এলাকায় ত্রান পৌঁছেনি বলে ভূক্তভোগীরা জানান। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার নতুন সমস্যা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় আছঁড়ে পড়ায়। দর্শনাথীদের কারনে চরম বিব্রতকর ক্ষতিগ্রস্থরা। দল বেঁধে বেধেঁ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসছে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল ঘুরে দেখার জন্য। আবার কোন কোন ত্রান বিতরণকারী ছবি উঠানোর আশায় ত্রান নিয়ে আসছে। এমনিতেই কেউ পুত্র, কেউ কন্যা, কেউ পিতামাতা হারিয়েছে ভয়াল টর্ণেডোর ছোবলে। তাদের দীর্ঘ দিনের সাজানো সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তাতে করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের পরিবারের উপর বাড়তি চাপ। তারপরও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো নতুন জীবনের আশায় আবারো ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে। টর্ণেডোর পর থেকে চান্দি, উরশিউড়া, জারুলতলা, আমোদাবাদসহ বিভিন্ন গ্রামে চোরের উৎপাত বেড়ে গেছে। সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন বাতাসে উড়িয়ে যাওয়া জিনিসপত্র খুঁজে জড়ো করছে। বাড়িঘরে আবর্জনা অপসারন করছে। গৃহবধূ হেলা বেগম (৩৫) জানান, তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ থেকে লোকজন এসে মিটার খুলে নিয়ে গেছে। ভাতশালা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের উচ্চ ক্ষমতা সস্পন্ন তার এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
আবুল কাশেম জানান, কেউ আমাদের সহযোগীতা করতে আসেনি। বাতাসে সব কিছু উড়িয়ে নিয়ে গেছে। আগামী ১৫ বছরেও আমরা দাঁড়াতে পারবো না। মানুষ দেখলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায়। শুধু একটি আকুতি ভাই আমাদের বাঁচান। চান্দি গ্রামের হেলাল মিয়া জানান, আমার বোনের স্বামীকে গুরুতর আহত অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কুমিলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানের মর্গে গিয়ে টর্ণেডোর সময় নিখোঁজ থাকা আমার বোন আরশেদার মৃত দেহ দেখতে পাই। শনিবার রাতে লাশ নিয়ে এলাকায় এসে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় দাফনের ব্যবস্থা করি। চান্দি গ্রামের জলিল মিয়া জানান, টর্ণেডোর তান্ডবে বাড়ি ধবংশ হয়ে গেছে। শুধু ভিটেমাটি রয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোন সরকারী সাহায্য সহযোগীতা পাইনি। খাবার পানি পর্যন্ত নাই। পুকুরে জীবজন্তু মরে ভেসে আছে। ফুলবাড়িয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, রবিবার দুপুর পর্যন্ত তারা সরকারী কোন ত্রান পায়নি। এমনকি কেউ কোন খোঁজ নেয়নি। |