সুমন নূর :কোথাও চলছে গান, কোথাও দৃপ্ত স্লোগান। রাস্তায় আঁকা হচ্ছে ব্যঙ্গচিত্র, পাশেই আবার জনতাকে উদ্বুদ্ধ করছে মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র। কোথাও চলছে নাটক, কোথাও ফাঁসিতে ঝোলানো রাজাকার ঘাতক। কারও কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও বা শরীরে প্রতিবাদী সব লেখা। খণ্ডে খণ্ডে এসব আয়োজন চললেও সব মিলিয়ে যেন একসূত্রে গাঁথা এক মহাকাব্য। অগ্রন্থিত এ মহাকাব্যের ভাষা হয়তো ভিন্ন, কিন্তু বক্তব্য একটাই—মানবতাবিরোধীদের ফাঁসি। কোলের শিশু থেকে শুরু করে সদ্য স্কুলে ভর্তি হওয়া ছাত্র, দুরন্ত কিশোর থেকে শুরু করে সদ্যে পদার্পণ করা তারুণ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী যুবক থেকে শুরু করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, শুরু করে শ্রমিক সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আছেন এই মহাকাব্যে। কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় প্রত্যাখ্যান করে মোড়ে জড়ো হন জনতা। এরপর শহরের পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে তৈরি হয় নবজাগরণ মঞ্চ। স্লোগানে, কবিতায়, বক্তৃতায়, প্রতিবাদে পাঁচ দিন ধরেই ওই মঞ্চ উজ্জীবিত। কিন্তু সেই মঞ্চই সব নয়। ওই মঞ্চ ঘিরে খণ্ডে খণ্ডে তৈরি হয়েছে আরও অনেক গল্প। শুক্রবার মহাসমাবেশের পর শনিবার সকাল পেরিয়ে দুপুর। সূর্যের উত্তাপে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা দায়। কিন্তু হাজারো মানুষের কণ্ঠে উদ্দীপ্ত স্লোগান। মূল মঞ্চের পেছনের দিকে শহরের পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে ’৭১-এর লাল-সবুজের সেই পতাকা। মাঝখানে বাংলাদেশের মানচিত্র। ওই পতাকার চারপাশে বসে স্লোগান দিচ্ছেন কিছু মানুষ, যেন তাঁরা প্রিয় পতাকাকে আগলে রাখার শপথ নিচ্ছেন। আর অনেকের সঙ্গেই স্কুলের পোশাক পরা একদল ছাত্রকেও দেখা গেল, পতাকা ছুঁয়ে তারা স্লোগান দিচ্ছে। এসেছে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি নিয়ে। তাদের খানিকটা দূরত্বে স্লোগান দিচ্ছিলেন তাল মেলাচ্ছিলেন তাঁর সুরে। |