সাগর-রুনির বাসার দারোয়ান এনামুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলষ্টেশন থেকে গ্রেপ্তার
মনিরুজ্জামান পলাশ মনিরুজ্জামান পলাশ : গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন পলাতক আসামি তাদের ফ্ল্যাটের দারোয়ান এনামুল কবিরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার রেলস্টেশন করেছে । এনামুল মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ ইউনিয়নের পূর্ব দক্ষিণভাগ গ্রামের মকবুল হোসেন কালার ছেলে। এনামুলকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি সূত্র। সূত্র আ্ররও জানায়, এনামুল এতোদিন পালিয়ে শ্রীমঙ্গলে ছিলেন। সেখানে তিনি পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন চা বাগানে কাজ করেছেন। শুক্রবার গভীর রাতে এনামুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে আসেন। ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম রাজাবাজারের ফ্ল্যাট থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এনামুল কবির ওরফে হুমায়ুন কবির সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সময় রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাগর-রুনির ভাড়া ফ্ল্যাটের বাড়ির দারোয়ান হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। তবে হত্যাকাণ্ডের পর পরই হুমায়ুনকে ডিবি পুলিশ আটক করেও ছেড়ে দেয়। এর পর থেকে গত প্রায় এক বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। বার বার তদন্তকারী সংস্থা ও কর্মকর্তা পরিবর্তন করে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের কোনো কিনারা করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর গত বছরের ৯ অক্টোবর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বলেন, “হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে এবং আট জনকে সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পলাতক আসামি হুমায়ুন ওরফে এনামুলকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয় সেদিন। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় ৠাব। ৠাবের গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছে। তারা মনে করছিলেন, দারোয়ান এনামুল এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অনেক কিছু জানেন এবং তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটিত হবে। এ কারণে এনামুলকে সাগর-রুনি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বিবেচনা করে তাকে গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযানে নামে ৠাব। ৠাবের এ তৎপরতার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি শ্রীমঙ্গল ত্যাগ করে অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে আসেন বলেও মনে করছে ৠাব। এনামুলকে ধরতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার বাড়িতেও অভিযান চালান। এরই এক পর্যায়ে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন মকবুল হোসেন কালা। ১৭ অক্টোবর রাতে কে বা কারা তাকে ভৈরবের একটি অজ্ঞাত স্থানে ফেলে যায়। অসুস্থ অবস্থায় পরদিন ভোরে তিনি বাড়ি ফেরেন। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং এনামুলের অবস্থান জানতে ৪ নভেম্বর তার বাবা মকবুলকে ঢাকায় ৠাবের সদর দফতরে ডেকে এনে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদও করেন এ মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ফরেনসিক উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাফর উল্লাহসহ তদন্তকারী কর্মকর্তারা। |