Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলার ট্রাইব্যুনাল প্রদত্ত ৮ জনে ফাঁসির আদেশ বহাল

+100%-
শামীম উন বাছির । রাহ্মণবাড়িয়ার স্মরণকালের সর্বালোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলার ফাঁসির দ-াদেশ প্রাপ্ত ৮ আসামীর আপীল খারিজ করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। গত ১৮ এপ্রিল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি আফজাল হোসেন আহমেদ এবং বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদ এর যৌথ বেঞ্চ শুনানীশেষে সিরাজুল ইসলাম গং এর আপীলটি (ফৌজদারি আপীল নং ৪২৫৬/২০০৬) খারিজ করেন। ফলে বিগত ২০০৬ সালে চট্টগ্রামস্থ বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের দেয়া ৮ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রইলো।রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন ডেপুটি এটর্নী জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম ও অ্যাডভোকেট এস.এম. শাহজাহান এবং আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মহাবুব হোসেনসহ অন্যান্য আইনজীবীগণ।
ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামীরা হলেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী-শহরের আলোচিত বড়ভাই সিরাজুল ইসলাম(৬১), তার দুই পুত্র সোহেল রানা (৩৫) ও রাজিব আহমেদ (২৮),ভাড়াটে খুনী মাসুম মিয়া (৩৮),কবির হোসেন (২৮), পিয়াস মিয়া (২৪), জামির হোসেন (৩২) এবং মানিক মিয়া। বর্তমানে তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন। বিগত ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালত থেকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্থানান্তরের পর আদালত ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ২১ জুলাই ট্রাইব্যুনালের পিপি আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী মঞ্জুর আলম আনসারী সরেজমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে ঘটনাস্থল অর্থাৎ সপরিবারে নিহত ঠিকাদার আকতার হোসেনের বাড়ি ও তার আশপাশ এলাকা পরিদর্শনসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন। টানা তিন মাস পর্যন্ত যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠানশেষে ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালের বিচারক ৮জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সিরাজুল ইসলাম গং হাইকোর্টে আপীল করেন। দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ বছরের মাথায় গত ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট আপীলটি খারিজ করায় ট্রাইব্যুনাল প্রদত্ত ৮ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল থাকলো।
উল্লেখ্য, বিগত ২০০৫ সালের ১০ আগস্ট বুধবার দিবাগত গভীররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পশ্চিমমেড্ডাস্থ এস.এ. ভবন নামের নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে ঘাতকদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন শহরের বিশিষ্ট ঠিকাদার ব্যবসায়ী আকতার হোসেন (৪১), তার সাত মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী সাবরিনা আক্তার জুলি (২৭) এবং তাদের সাড়ে তিন বছর বয়েসী একমাত্র কন্যা সন্তান অর্ণা আক্তার। এই ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা হবার তিনদিনের মাথায় ভাড়াটে খুনী বাবুল মিয়া গ্রেফতার হয়। বাবুল প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের সাতদিনের মাথায় কারাভ্যন্তরে রহস্যজনকভাবে মারা যায়। ফলে মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে বাকি ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন করে ২০ অক্টোবর তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
উচ্চ আদালতে আপীল খারিজের প্রেক্ষিতে আসামীদের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ বহাল থাকলো এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নিহত সাবরিনা আক্তার জুলির বৃদ্ধ পিতা আবদুর রশিদ সরকার বলেন,‘আমি আল্লাহর কাছে যেই প্রার্থনা করেছিলাম সেই প্রার্থনা কবুল হয়েছে বলে মনে করি। আমার মেয়ে-জামাই-নাতনীর ঘাতকদের ফাঁসি হোক সাত বছর ধরে এটাই চেয়ে আসছি, পেয়েছি। আমি বেঁচে থাকতে তাদের ফাঁসি কার্যকর দেখে যেতে চাই।’







Shares