Main Menu

নব নির্বাচিত পৌর পরিষদের প্রথম সভা ও মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ খোলা আকাশের নিচে

+100%-

খোলা আকাশের নিচেই দায়িত্ব নিতে হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর পরিষদকে। বৃহস্পতিবার পৌর ভবনের সামনে দায়িত্ব গ্রহনের এই ভিন্ন আয়োজনে ছিলো বিষাদের ছাপ। হেফাজতের হরতাল-আন্দোলনে তান্ডব চালানো হয় এই পৌরভবনে। ভাঙ্গচুর আর আগুনে পুড়ে শেষ হয় তাতে সবই। নাগরিক সেবা প্রদানের কোন কিছুই রক্ষা হয়নি। পুরো পৌরভবন জুড়ে ছাইভস্মের চিহ্ন। প্রায় ৭২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান পৌরসভার কর্মকর্তারা। হামলা হয় মেয়রের বাসাতেও। পৌরভবনের সামনের রাস্তায় দুটি তাবুতে খোলা হয়েছে অস্থায়ী কার্যালয় ও তথ্য সেবা কেন্দ্র। এমনি বিপর্যস্ত অবস্থায় দায়িত্ব কাধে নিলো নতুন পৌর পরিষদ। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত মেয়র নায়ার কবির আসেন পৌর প্রাঙ্গনে। ভবনের সামনের রাস্তায় খোলা আকাসের নিচে আধঘন্টায় শেষ হয় তার আর কাউন্সিলরদের দায়িত্বভার গ্রহনের আনুষ্ঠানিকতা। এরআগে ২৩শে মার্চ চট্টগ্রামে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে শপথ নেয় এই পৌর পরিষদ।
দায়িত্বগ্রহনের পর মেয়র নায়ার কবির ঘুরে ঘুরে দেখেন জ্বলে পুড়ে যাওয়া সবকিছু। প্রতিক্রিয়ায় জানান-এমনটি হবে কখনো ভাবতে পারিনি। অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। এভাবে তারা সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিলো কোন আক্রোশে। সেটিই আমার প্রশ্ন। অথচ যুগযুগ ধরে এই পৌরভবন,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন অফিসে কার্য্যক্রম চলেছে। কিন্তু এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। দায়িত্ব নিতে আসা কাউন্সিলর মো. ফারুক মিয়া ও মীর মো. শাহিন এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবী করেন।
নায়ার কবির দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়েছেন গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। পৌর ভবন ও মেয়রের বাসায় হামলার জন্যে ঘটনার পর থেকে হেফাজত নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার দুই প্রতিদ্বন্ধি বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনকে দায়ী করা হয়।
পৌর সচিব মোঃ সামছুদ্দিনের সঞ্চালনায় মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ ও পৌর পরিষদের প্রথম সভায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত কাউন্সিলর হোসনে আরা বেগম, শাহানা বেগম, মিনারা বেগম, নিলুফা ইয়াছমিন, কাউন্সিলর মোঃ জামাল হোসেন, শেখ মোঃ মাহফুজ মিয়া, আক্তার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান, মোঃ আবদুল মালেক, ওমর ফারুক জীবন, ফারুক আহমেদ, মীর মোঃ শাহীন মিয়া, মোঃ ফারুক মিয়া, মোঃ কাওসার মিয়া, মোঃ সাকিল, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী নিকাশ চন্দ্র মিত্র, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কাউছার, সহকারী প্রকৌশলী কাউছার আহমেদসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
২৮শে মার্চ পৌর ভবনে হামলার আগে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে পৌরসভার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা হয়। শাবল দিয়ে খুচিয়ে ভাঙ্গা হয় বঙ্গবন্ধুর ৩টি ম্যুরাল। স্কয়ারের ফোয়ারাতে থাকা ৯টি সাবমার্সিবল পাম্প আগুনে পোড়ানো হয়। পৌর মুক্তমঞ্চের গ্রানাইট পাথর,৫০টি বৈদ্যুতিক খুটি,২০টি ফ্লাড লাইট ভাঙ্গচুর করা হয়। এরপর ২৮শে মার্চ হরতাল চলাকালে হামলা হয় পৌরভবনে। ভাঙ্গচুর-লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় সেখানে। এতে ৪ তলা বিশিষ্ট পৌরভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে পৌরভবনের আসবাবপত্র বলতে কোন কিছু নেই। আগুনে ছাই হয়ে গেছে সব রেকর্ডপত্র। এরপর থেকেই বন্ধ রয়েছে সব ধরনের নাগরিক সেবা। ময়লা আবর্জনা সাফসুতরো করার বেলচা পর্যন্ত লুট হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারন বন্ধ থাকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত।






Shares