Main Menu

এবারও রমজানে হতদরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ ‘বাউনবাইরার কতা’র

+100%-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল হক। তার ৪ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। এরমধ্যে ২য় সন্তান ওবায়দুল্লাহর দুই হাত নেই। ছোট বেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে দুইটি হাত কেটে বাঁচাতে হয়েছে ওবায়দুল্লাহকে। হতদরিদ্র এই পরিবারটির একমাত্র উপার্জনকারি বৃদ্ধ দিনমজুর আব্দুল হক। আব্দুল হকের ছেলে ওবায়দুল্লাহর কথা জানতে পেরে পাশে দাঁড়িয়েছে ‘বাউনবাইরার কতা’। তাকে কিনে দেওয়া হয়েছে তিনটি ছাগল। যেন লালন পালন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
জেলা শহরের কাজিপাড়ার ১৭/১৮বছরের তরুণ শুভ। তার বাবা মারা গেছেন প্রায় তিন বছর আগে, একমাত্র ভাইটিও মারা গেছেন। এখন মা ও ছোট একটি বোনের দায়িত্ব তার কাদে৷ তাদের নিজেদের কোন বাড়িঘর নেই। কাজিপাড়ায় সাহাপাড়ায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাসা করে আসছেন। ঘর ভাড়া ও অন্নসংস্থানের জন্য হকার্স মার্কেটে একটি দোকানে মাসিক সাড়ে ৪হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। সেই চাকরিতেও বেশি দিন থাকতে পারেননি। পরে বাধ্য হয়ে ফুটপাতে এক ফল ব্যবসায়ীয় সাথে কর্মচারী হিসেবে থাকা শুরু করেন। শুভ ও তার পরিবারের কথা জানতে পারে ফেসবুক ভিত্তিক পেইজ ‘বাউনবাইরার কতা’। তারা উদ্যোগ নেন শুভকে একটি ভ্যানগাড়ি ও ফলের ব্যবসা করতে সহযোগিতা করার। বৃহস্পতিবার দুপুরে শুভ ও তার মায়ের হাতে ভ্যানগাড়ি ও ফলের ব্যবসা করতে ১০হাজার টাকা পুজি তুলে দেন ‘বাউনবাইরার কতা’র সদস্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, বাউনবাইরার কতার এডমিন ডা. মাহবুবুর রহমান এমিল, মডারেটর মো. আরিফুল ইসলাম, আমিরুল সরকার, মুজিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম মোল্লা, গোলাম কায়সার কিবরিয়া ভূইয়া।
এসময় বাউনবাইরার কতার এডমিন ডা. মাহবুবুর রহমান এমিল বলেন, প্রতিবছর রোজায় আমরা অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবার গুলোকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়ে থাকি। এনিয়ে ৪ বছর বাউনবাইরার কতা প্রজেক্ট স্বাবলম্বী উদ্যোগ নিয়েছি। এবছর ২৫টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। যেন আমাদের সহযোগিতায় তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পরিবার নিয়ে চলতে পারে। এই বছর ফলের বিক্রি করার পুজি সহ ভ্যান দিয়েছি দুইটি, একটি চা-পান বিক্রয়ের টং, একজনকে মুদির দোকান, দুইটি পরিবারকে গাভী, ৩টি পরিবারকে ৯টি ছাগল, একজনকে মোবাইল ব্যবসার সামগ্রী, ১০টি সেলাই মেশিন, একটি হতদরিদ্র পরিবারকে বাথরুম ও টিউবওয়েল বসিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘বাউনবাইরার কতা’ ফেসবুক গ্রুপে একলক্ষের উপরে সদস্য রয়েছেন। প্রতিবছর রোজায় অধিকাংশ যাকাতের অর্থ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন গ্রুপে সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আমরা তাদের দেওয়া অর্থ সঠিক ও স্বচ্ছভাবে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়েছি। শুধু গত বছর করোনার ভয়াল থাবায় এই প্রজেক্ট স্বাবলম্বী করতে পারেনি। তবে প্রায় ৬শতাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছিলাম। প্রতিবছর ২৭রমজান বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কিন্তু করোনার মহামারীর কারণে আমাদের অনুষ্ঠান বাতিল করে, যার যার হাতে তাদের প্রাপ্য পৌঁছে দিচ্ছি।





Shares