ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের নিয়োগ, ‘স্মার্টকার্ড’ না থাকায় পরীক্ষা থেকে বাদ ৭০০ জন!
‘আমরা তো রোহিঙ্গা না। স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে পাস করার পর সার্টিফিকেট দিয়েছে। আইডি কার্ড আছে। স্মার্টকার্ড তো পাইনি। তাহলে দিবো কিভাবে।’- ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কদমতলীর শিরণ মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া।
রবিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ লাইনের সামনে কথা হয় ইমনের সঙ্গে। পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তিনি। তবে ‘স্মার্টকার্ড’ না থাকায় তাকে বের করে দেওয়া হয়। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইমন।
পুলিশ লাইনের সামনে অপেক্ষারত অনেকের সামনে কথা বলে জানা যায়, স্মার্টকার্ড না থাকার অজুহাতে অন্তত ৭০০ জনকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অথচ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কোথাও ‘স্মার্টকার্ড’ আনার কথা বলা হয়নি। সেখানে প্রার্থী কিংবা তাঁর পিতা মাতার আইডি কার্ড আনার কথা বলা হয়।
পুলিশ লাইনের সামনে টানানো একটি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পরীক্ষার সময় প্রার্থী জাতীয় পরিচয় পত্রের (এনআইডি) মূলকপি দেখাতে হবে। আর যদি সেটা না থাকে তাহলে তার বাবা মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি দেখাতে হবে।
কথা হয়, মো. রহমত উল্লাহ ও মো. মহিউদ্দিন নামে দুই চাকরি প্রার্থীর সঙ্গে। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ইচ্ছে করেই আমাদেরকে বের করে দেওয়া হয়। কারণ অনেকের কাছে স্মার্টকার্ড তো দূরের কথা কোনো কাগজপত্রই চাওয়া হয়নি। অথচ যাদেরকে বাদ দেওয়া হয় তাদের কাছে এটা সেটা চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে স্মার্টকার্ড চেয়ে না পেয়ে বের করে দেওয়া হয়। স্মার্টকার্ড যেহেতু সরকার দেয়নি সেহেতু না থাকার বিষয়টি জানানো হলেও পাত্তা দেওয়া হয়নি।
জয় দেব নামে আরেকজন বলেন, ‘প্রথমধাপের পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হই। পরে আমার কাছে স্মার্টকার্ড চাওয়া হয়। কিন্তু আমাদেরকে স্মার্টকার্ড দেওয়া হয়নি জানানোর পরও পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আরো অনেককেই স্মার্টকার্ড না থাকার কারণে বের করে দেওয়া হয়।’
শয়ন সরকার নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের আবেদন থেকে সব ধরণের প্রক্রিয়া আমি করেছি। কিন্তু নিয়োগের কোথাও বলা নাই যে স্মার্টকার্ড লাগবে। অথচ স্মার্টকার্ড না থাকায় আমার ভাইকে পরীক্ষার স্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এনআইডি কার্ড থাকার পর কেন স্মার্টকার্ডের প্রয়োজন সেটা বুঝতেছি না।’
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সাংবাদিকদেরকে তিনি জানান, স্মার্টকার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়নি। মূলত এনআইডি কার্ড না থাকাসহ বিভিন্ন সমস্যা ছিলো অনেকের। যে কারণে কাগজপত্র পরীক্ষার সময় তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়।
(প্রতিবেদনটি কালের কন্ঠে প্রকাশিত)