এটি কোনো গল্প নয় বাস্তব ঘটনা; অর্থের লোভ কী ডাক্তার নামের কসাইদের কোনো দিনও যাবে না???
ওয়েব থেকে নেয়া:: ওটিতেই নিশ্চুপ প্রাণে শুয়ে আছেন প্রসূতি মা। নিথর দেহ! পাশে নেই নবজাতক। ময়লা আবর্জনা ভরা ট্রেতে ছোট্ট পৃথিবীটি হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছে। একেবারে শান্ত! নবজাতকের মৃতদেহ ডাক্তার নামের নরপশুদের ধিক্কার জানাচ্ছে।
স্বামী প্রবাসী। বাবা হওয়ার স্বপ্ন বুকে। স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলো। স্ত্রীর বুকে জগতের সব স্বপ্ন বাসা বেধেছে। মা ডাক শুনবে। আহ কি আনন্দ!
চুক্তি ছিলো ডাক্তারকে ১২,০০০ টাকা দিতে হবে। বিনিময়ে শত যন্ত্রণা ভুলে মা শুনবেন মা-মা ডাক। কিন্তু সেই আনন্দ প্রবাসী পিতা আর মায়ের কপালে জুটলো না।
অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষা করছে পরিবারের লোকজন। নবজাতকের নবকান্নার সুর শুনবে সকলে। প্রতিক্ষা! প্রতিক্ষা! কোনো কান্নার শব্দ নেই।
পিনপতন নিরবতা! ডাক্তার-নার্স বেরিয়ে আসলেন। স্বজনদের মুখে হতাশা! কি হলো?
ডাক্তার তার সহযোগীদের নিয়ে কেটে পরলেন। সবাই হতবাক! স্বজনরা উপায়ন্তর না দেখে অটির মধ্যে ঢুকলেন। তারপর যা দেখলেন তা দেখার জন্য সারা জগতের কোনো নারকীয় কীটও অপেক্ষা করেনি।
ওটিতেই নিশ্চুপ প্রাণে শুয়ে আছেন প্রসূতি মা। নিথর দেহ! পাশে নেই নবজাতক। ময়লা আবর্জনা ভরা ট্রেতে ছোট্ট পৃথিবীটি হুমড়ি খেয়ে পড়ে আছে। একেবারে শান্ত! নবজাতকের মৃতদেহ ডাক্তার নামের নরপশুদের ধিক্কার জানাচ্ছে।
প্রিয় পাঠক এটি কোনো সিনেমা বা নাটকের গল্প নয়। ঘটনাটি বাস্তব। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শরীয়তপুর নার্সিং হোম নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ঘটেছে এই নারকীয় ঘটনা।
ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় প্রাণ দিলো প্রসূতি মা ও নবজাতক। শুধু মৃত্যুই শেষ নয়, মৃত নবজাতক এবং হতভাগা মাকে অপারেশন থিয়েটারে রেখে পালিয়ে গেলেন চিকিৎসক-নার্সসহ ক্লিনিকের স্টাফরা।
পালিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিলে রোগীর স্বজনদের মারধরও করেন তারা।
নিহত হতভাগা মায়ের নাম ময়না বেগম। শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার মডেরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় শরীয়তপুর নার্সিং হোমে ভর্তি করেন।
২,০০০ টাকা চুক্তিতে বেলা আড়াইটার সময় ময়না বেগমের অপারেশন শুরু করেন ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার এম, এ দাউদ।
অপারেশন শুরুর আধাঘণ্টা পর ডাক্তার ও নার্স অপরেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় রোগীর স্বজনরা রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে রোগীকে ঢাকায় নেওয়া লাগবে বলে ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যান ডাক্তার এম,এ দাউদ ও ক্লিনিকের স্টাফরা।
এ সময় রোগীর স্বজনরা বাঁধা দিলে তাদের মারধরও করেন স্টাফরা। খবর পেয়ে পালং থানার পুলিশ এসে ক্লিনিকের সামনে থেকে একজনকে আটক করে।
নিহত ময়না বেগমের স্বামী জসিম ভূঁইয়া বর্তমানে দুবাই প্রবাসী। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি দুবাই রয়েছেন।
নিহত ময়না বেগমের মা মজিদা বেগম, বাবা হাশেম রাঢ়ি, শ্বশুর রহমআলী ভূঁইয়া, ননদ ফরিদা বেগমসহ আত্মীয়-স্বজনরা ক্লিনিকে বসে আহাজারি করছেন। কাকে কি বলবে, কি করলে ভালো হবে যেনো সব কিছু ভুলে গেছেন তারা।
তারা রোগী ও সন্তানের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন। ডাক্তার এম,এ দাউদের বিচার কামনা করছেন। কিন্তু বিচার পাবেন কী?
খোজ নিয়ে জানা গেছে, এম.এ দাউদ চোখের ডাক্তার হিসেবে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চাকরি করতেন। এ অবস্থায় তিনি বিভিন্ন ক্লিনিকে অন্তসত্ত্বাদের অপারেশন করতেন।
চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর শরীয়তপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সংলগ্ন একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিনি শরীয়তপুর নার্সিং হোম নামে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে সেখানে রোগীদের সিজার করা শুরু করেন।
সাইনবোর্ডে লেখা চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন এবং সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া।
অথচ কুষ্টিয়া মডিকেল কলেজ নামে কোনো কলেজ নেই এবং তিনি কখনো কুষ্টিয়া যান না। তিনি শরীয়তপুরেই রোগী দেখেন।
কুখ্যাত এই দাউদের বাড়ি যশোর জেলায়। এর আগে তার বিরুদ্ধে ভুল অপারেশনে একাধিক রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বড় হতশা! বড় কষ্ট! একটি কসাই এভাবে কত জীবন মেরেছে তার হিসেব আমাদের জানা নেই। ডা্তার নামের এই নর পিশাচ কতটা জঘণ্য যে, মৃত্যুর অটিতে রেখেই পালিয়ে গেছেন। মৃত নবজাতকটিকে নোংরা স্থানে একটি ট্রেতে করে ফেলে রেখ। আহ! কত অমানবিক!
একটি জীবন একটি মা! একটি প্রেমিকা। এটি স্বজন! একটি ভালোবাসা! এটি গল্প! একটি পৃথিবী!
ডাক্তার নামের এই কসাইরা কীভাবে বুঝবে জীবনের মূল্য। আমি এই নরপিশাচ এবং তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করি।