Main Menu

নামাজ বুঝে পড়া এবং নামাজে মনোযোগী হওয়া

+100%-

praying_salat_in_public_thumbডেস্ক ২৪:: নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের জীবনকে বদলে দেয় ।
আসুন সবাই নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি >>

স্রষ্টা মানুষের মধ্যে জন্মগত ভাবে ভালো ও মন্দের পার্থক্য বোধ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কুরআনে আল্লাহ বলেন- ‘আর আমি ভালো ও মন্দ উভয় পথ তার জন্য সুস্পষ্ট করে রেখে দিয়েছি’(সুরা আল বালাদ)। ‘আমি তাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছি, চাইলে তারা কৃতজ্ঞ হতে পারে আবার চাইলে হতে পারে অস্বীকারকারী’। (সুরা আদ্দাহর)।

প্রতিটি মানুষ দিনকে দিন নিজেকে বদলে নিচ্ছে,কেউ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিজের জীবনকে আল্লাহর বিধান মতে ইসলামের দিকে ধাবিত করেছেন,
আবার কেউ শয়তানের ধোকায় পড়ে বিপদগামী হচ্ছে । এর কারন হচ্ছে কি জানেন !
আমরা আল্লাহ পাক রাব্বুল আল আমিনের সুস্পষ্ট আয়াত আল কোরআনের বাণী এবং আল্লাহর নাযীল কৃত প্রতিটি বিধান এবং নবী রাসুলগনের দেখানো পথ থেকে সরে যাওয়া ।
এই সরে যাওয়ার কারন হচ্ছে আমরা যদি আল্লাহর দেয়া বিধান কিংবা আল-কোরআনের বাণী বুঝে শুনে পড়তাম এবং জানতাম । তবেই আমাদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, আস্থা আরো দৃর হত ,ইসলামিক জ্ঞান আরো মজবুত হত।
যেমন,আমরা সালাম দেই, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ( অর্থঃ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হউক) অর্থটা জানাতে সালাম দিয়ে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করি ।
ঠিক নামাজ পড়ার নিয়্যতের অর্থ,জায়নামাজের দাঁড়ানোর নিয়্যত অর্থ,আল্লাহু আকবার বলা থেকে শুরু করে, প্রতিটি সূরার অর্থ জানা, রুকুতে যাওয়ার সময় কি বলছি,রুকু থেকে সোজা হওয়ার সময় কি বলছি,সেজদাতে যাওয়ার সময় কি বলছি, বসার সময় এবং সালাম ফিরানো,পুংখানো ভাবে নামাজের প্রতিটি সেকেন্ডে কি বলছি যদি জেনে বুঝে পড়ি তাহলে আমাদের কলিজা,আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাসও ভালবাসা,ইসলামের বন্ধন এবং ঈমানী দ্বায়িত্ব আরো মজবুত হবে । আর আল্লাহ অনেক বেশী খুশী হবেন ।
আমাদের জেনে বুঝে পড়াটা শুধু নিজের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে,কেননা আমরা তো নামাজ পড়ছি,তাহলে তা যেনে বুঝে কি পড়তে পারিনা,এখন হাত বাড়ালেই বাংলা অর্থ সহ নামাজ শিক্ষা এবং বাংলা অর্থ সহ কোরআন শরীফ পাওয়া যায় । কেউ কি ইচ্ছা করে তার পরীক্ষায় মার্ক কম পেতে চায়,কেউ কি ইচ্ছা করে পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ করতে চায়,
যেমন আমরা পরীক্ষার খাতায় একই পরীক্ষা,একই প্রশ্ন,কিন্তু মার্ক কম বেশী হয় কারন কেউ পড়ে না বিধায় সে ফেল করে,কেউ অল্প পড়ে বিধায় মার্ক কম পায়,কেউ মুখস্ত পড়ে তাই একটু বেশী পায়,আর কেউ গোল্ডেন পায় ,আর যে গোল্ডেন পায় সে জেনে বুঝে,শিখে পরীক্ষা দিচ্ছে।
তবে আমরা কেন আল্লাহর কাছে মার্ক কম পাবো বা পরীক্ষায় ফেল করবো ?
আমরা কেন,না জেনে,না বুঝে,সারাক্ষন ঘোরের মধ্যে থেকে মুখস্থ পরীক্ষা দিতে যাবো,
একটু চেষ্টা করলেই আমরা আল্লাহ পরিক্ষার খাতায় গোল্ডেন মার্ক উঠাতে পারি।
তাই আসুন সবাই জেনে বুঝে নামাজ পড়ি,জেনে বুঝি কোরআন শরীফ পড়ি,
মানুষের মধ্যে একটি নফসে লাওয়ামাহ(বিবেক)আছে। সে অসৎ কাজ করলে তাকে তিরস্কার করে।
(সুরা আল কিয়ামাহ আয়াত-২)।
আর প্রত্যেক ব্যক্তি সে যত ওজর পেশ করুক না কেন সে কি তা সে খুব ভালো করেই জানে।
(সুরা আল কিয়ামাহ আয়াত১৪-১৫)।
মানুষ ইচ্ছা করলেই পারে,আর আপনি আমি সৎ সুন্দর নিয়্যত করলেই আল্লাহ আমাদের জন্য বিশেষ মেহেরবান,বিশেষ রহমত নাযিল করে দিবেন। আর তখন আমাদের ঈমান আরো মজবুত হবে ।
আমাদের সঠিক ভাবে মনোযোগ সহকারে নামাজ পড়তে আরো সহজ হবে ।

নামাজে মনোযোগঃ
আমরা অনেকেই বলতে শুনি নামাজে দাড়ালো দুনিয়াবী অনেক কথা মনে হয় । এজন্য নামাজে অনেক ভুল হয়,ঠিক ভাবে মনোযোগী হয়ে নামাজ পড়তে পারিনা ।
সত্যি কথা বলতে কি নামাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য আমরা কোন চেষ্টাই করিনা ।
আচ্ছা,আমরা যখন কোন ফাইনাল পরীক্ষা দিতে যায়,যেমন এস,এস,সি পরীক্ষা, তখন কত দিন ধরে প্রস্তুতি নেই,আনুমানিক ছয় মাস ধরে একদম সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু পড়ালেখা করেই যায়,তারপর পরীক্ষা দেই,
আর নামাজ পড়তে গেলে কতদিন না হয় বাদেই দিলাম , কতক্ষন প্রস্তুতি নেই, ধরেন আপনি দোকানে বেচাকেনা করছেন,কিংবা খুব মজার একটা ছিনেমা দেখছেন,অর্ধেক হল আর আযান হল,ব্যস তখনি , পাক নাই,পবিত্র নাই,নামাজের ওয়াক্ত হল আর নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম ।
আর তখন নামাজে দাড়ালে কি,ব্যবসার বেচাকেনা কত হল,কত কাস্টমার মাল নিতে দাঁড়িয়ে আছে অথবা ছিনিমার বাকি দৃশ্যটা কি হবে কিংবা খেলা কখন শুরু হবে ।
এটা মনে হবে নাকি এখন নামাজ পড়ছি এটা মনে হবে।
কি মনে হয় নামাজ কি এতোই ফেলনা,এতোই সোজা,
ছিনেমা দেখতে হলে দোকান থেকে ১ ঘন্টা জার্নি করে ক্যাসেট এনে তারপর ছবি দেখেন, খেলা দেখতে হলে সারাদিন থেকে প্রস্তুতি নেন আর নামাজ পড়তে গেলে কি প্রস্তুতি নেন,আযান দিল আর দাঁড়িয়ে গেলেন, আর এতেই কি নামাজে মনোযোগ চলে আসবে, আমরা তো নামাজের টাইম জানি,আযান দেওয়ার পরেও ১৫-২০ মিনিট সময় পাই, তবে কেন অন্তত সেই ২০ টা মিনিটেই নিজেকে নামাজের জন্য রেডি করিনা !
আসুন,নামাজের জন্য নিজেকে সুন্দর করে তৈরি করি,কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করি।
০১। নিজের মনকে একদম কোমল ভাবে তৈরি করি ,
০২। নামাজের টাইম সম্পর্কে অবগত হয় ।
০৩। নামাজের আগে কিছু সূরা বা হাদিস পড়ি,
০৪। নামাজ শুরু হওয়ার ২০ মিনিট আগে মসজিদে যাই।
০৫। পোশাক ও শরীল পাক পবিত্র কিনা গুরুত্ব সহকারে অবগত হয়।
০৬। নামাজ পড়লে উপকার এবং অপকার সম্পর্কে জানি।
০৭। নামাজ না পড়লে কি শাস্তি তা জানি
০৮। নামাজ না পড়লে কি উপকার তা জানি।
০৯। নামাজের আগে তাসবীহ বা জিকির করি
১০। কেয়ামতের বিচার এবং শাস্তি সম্পর্কে জানি ।
কত সময় কত ভাবেই না আমরা অবহেলায় নষ্ট করে দিচ্ছি,কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। আমাদের রব পাক রাব্বুল আল আমিনের বিধান কত সুন্দর,কত নেয়ামত পূর্ণ অথচ আমরা তা পালন করিনা ।
ভাবুন তো একবার,আমাদের জীবনের ছোট্ট একটি দুর্যোগ আসা মাত্রই আল্লাহ আল্লাহ কত বার বলি ঠিক নেই, ,আর আল্লাহ পাক সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কে সেই দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন (সুবাহান্নালাহ),আল্লাহ কত মহান,কত ক্ষমাশীল এবং দয়ালু ।
অথচ এই আমরাই সুস্থ থাকার জন্য,সুন্দর করে জীবন যাপনের জন্য আল্লাহর নাম নেয় না, তখন বলি আমরা তো ভালই আছি । অথচ আমরা সুস্থ স্বাভাবিক থাকা অবস্থায় কত সময় অবহেলায় নষ্ট করছি,কখনই আমরা আল্লাহর এই সুন্দর বিধান নিয়ে ভাবিনা,কখনোই এতো শান্তির পথে চলার ইচ্ছাও পোষণ করিনা। তবে কি আমাদের বিপদ যথার্থ নয় ।
আসুন আজ থেকেই নিয়্যত করি,নিজেকে সপে দেই, পাক রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে, সেজদা করি ,ক্ষমা চাই আল্লাহ কাছে, মিনতি করি আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন ।
আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন,মাফ করুন ।
সুন্দর সঠিক পথে পরিচালিত করুন ।
সবাইকে নিয়মিত জেনে,বুঝে নামাজ পড়ার ও কোরআন শরীফ পড়ার হেদায়েত দান করুন ।






Shares